শিরোনাম
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট সুনামঞ্জ জেলা শাখার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  জগন্নাথপুরে পলাতক দুই আসামী গ্রেপ্তার  ভৈরবে নিসচার দিনব্যাপি পরিবহন প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত   তাহিরপুরের রক্তি নদীতে নৌকা ও হাউজবোড থেকে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদাবাজির অভিযোগ সুনামগঞ্জে অ ভি যা ন দিয়ে পুলিশ যা পায় কুড়িগ্রামে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের ফলক উন্মোচন কালিহাতীতে ভাইয়ের অসুস্থতায় পাঁচ ভাই একত্রিত, পারিবারিক ঐক্যের নজির স্থাপন  সিলেটের সড়কে “মা” টোকেন বাণিজ্য : চাঁদাবাজ চক্রের জিম্মায় সিএনজি শ্রমিকরা, প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষুব্ধ জনতা সিলেট সদর উপজেলায় টিলা কাটার মহোৎসব: পরিবেশ আইনে আটক ৪টি গাড়ি, তবে ব্যবস্থা অধরা ছাতকে সেনাবাহিনীর অভিযানে ভারতীয় চোরাই পণ্যসহ ৩ জন আটক 
রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন

তাহিরপুরের রক্তি নদীতে নৌকা ও হাউজবোড থেকে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদাবাজির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার / ৪৩ Time View
Update : শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

‎সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুরের রক্তি নদীতে চলতি পথে এবং আনোয়ারপুর বাজারের আশপাশে অবস্থা করা হাউজবোড ও বিভিন্ন নৌকা থেকে বালিজুড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও ডেভিল হান্টের আসামি ছাত্রলীগ নেতা আবিদ হাসান রনির(২০) এর নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রলীগ নেতা রনি উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রামের বিএনপি নেতা ও আনোয়ারপুর বাজার কমিটির সভাপতি রতি মিয়ার ছেলে।

‎গত ১৭ জুলাই সরেজমিনে আনোয়ারপুর বাজার এলাকায় গেলে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ করে জানান, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমল ছাত্রলীগ নেতা রনির নেতৃত্বে স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ গ্রুপ ছাত্রলীগের প্রভাব কাটিয়ে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজার ঘাট ও এর আশপাশে রক্তি নদীতে রাখা হাউজবোড ও বিভিন্ন নৌকা থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার, দেড় হাজারসহ বিভিন্ন হারে টাকা জোরপূর্বক চাঁদাবাজি করছে ওই চক্রটি। কিন্তু বিগত ৫ আগষ্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ডেবিল হান্টে ছাত্রলীগ নেতা রনি তিন মাস জেল খেটটার সুবাদে কিছুদিন রনি ও তার লোকজনের চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও জেল থেকে বেড়িয়ে আসার পর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে রনি ও লোকজন। এলাকার বাবা এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি নেতা হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউই মুখ খোলতে সাহস করছে না। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই চলে হামলা মামলা আর হুমকি ধামকি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় এলাকাবাসীর ও হাউস বোডের মাঝি অভিযোগ করে এই প্রতিবেদককে জানান, ভাই তার বাপ এলাকার প্রভাবশালী লোক। আমাদের নাম কইলে আমরা আর বাজারে (আনোয়ারপুর বাজার) আইতা পারতাম না। আমাদের মারধর করবে। বিভিন্নভাবে অত্যাচার করবে। কি কইতাম ভাই! ছেলে ছাত্রলীগ নেতা বাপ বিএনপি নেতা। আওয়ামী লীগ না থাকলেও এখনতো বিএনপি আছে। তাই রনি তার বাপ বিএনপি নেতা রতি মিয়ার উপর ভর করে এখন আরও বেপরোয়াভাবে নির্বিঘ্নে চাদাঁবাজি চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের।

‎খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ নদী রক্তি। এই নদী পথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বালু,পাথর সহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করা হয়। এছাড়া পর্যটকবাহী হাউজবোড চলাচল করে এবং রাত্রিযাপন করে আনোয়ারপুর বাজার এলাকায়। এসব চলাচলকারী নৌকা ও আনোয়ার বাজারের আশপাশে অবস্থান করা হাউজ বোট থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন হারে চাঁদা উত্তোলন করেছে রনি ও তার লোকজন । প্রতিটি হাউজবোড থেকে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা উত্তোলন করে। না দিলে রাতে অবস্থান করলে ক্ষতি করাসহ নানান ভাবে হুমকি দেয়। এছাড়াও নদী পথে চলাচলকারী নৌকা থেকে জোড় করে টাকা উত্তোলন ও করছে ছাত্রলীগ নেতা রনি সহ আরও দুটি চাঁদাবাজ চক্রটি। এছাড়াও প্রতিটি নৌকা থেকে বিভিন্ন হারে টাকা উত্তোলন করছে রনি সহ আরও দুটি চাঁদাবাজ চক্র।

‎নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাউজবোড মালিক ও চালকগন জানান,টাকা না দিলে আমাদের মারপিট করে,নানা ভাবে হমকি দেয় আবিদ হাসান রনি ও তার দলবল। নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আর যেহেতু এখানে থাকতে হবে তাই বাধ্য হয়ে তাকে তার চাহিদা মত টাকা দেই। কোনো নৌকা থেকে ৫ শত কোনটি থেকে আরও বেশি টাকা দিতে হয় রনিকে। কিসের টাকা বললে রনি ও তার লোকজন আমাদের মারধর করে। এই নদী দিয়ে চলাচল করলে বা আনোয়ারপুর এলাকায় নৌকা লাগালেই নাকি তাকে টাকা দিতে হবে।

‎চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা আবিদ হাসান রনির বলেন, ভাই আমি ছাত্রলীগ করার কারণে এলাকার লোকজন আমার নামে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি কিছুদিন হয় ৩ মাস জেল খেটে আইছি। আমি কোন চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। এলাকার কিছু বখাটে ছেলে আছে তার এই এলাকায় থাকা হাউস বোর্ড ও নৌকা থেকে চাঁদা নিচ্ছে নিকই। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এবং আমার বাবা বিএনপি করায় তার সুনাম নষ্ট করার জন্য ওই চাঁদাবাজ চক্রটি চাঁদা নেয়ার সময় আমার নাম বলে এবং নাম্বার চাইলে আমার নাম্বার দিয়ে আসে। রাতে এখানে থাকা কিছু হাউস বোর্ডে আমি কারেন্টের ব্যবস্থা করে দিছি। তাই তারা আমারে কারেন্টের বিল হিসেবে টাকা দেয়। আমি চাঁদাবাড়ির সাথে জড়িত না।

‎এ বিষয়ে আবিদ হাসান রনির পিতা রতি মিয়া বলেন, আমার ছেলে চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। ছাত্রলীগ করার আমার ছেলে জেল খেটে আইছে মাত্র কয়েকদিন হয়। আর হাউস বোর্ড থেকে টাকা নেয়া বিষয়টি হল, কিছু হাউস নদী পূর্ব পাড়ে থাকতো। আমি বাজারের সভাপতি হওয়ায় বাজারের স্বার্থে কিছু নৌকা পশ্চিম পাড়ে আনি। এবং তাদের কারেন্টের ব্যবস্থা করে দেই। এবং তারে বলে দেই ওই নৌকা গুলো দেখাশোনা করতে। যাতে কোন লোক তাদের হয়রানি না করতে পারে। এবং তারা যাওয়ার সময় তাদের ব্যবহার করা কারেন্টের বিল হিসেবে টাকা দিয়ে যায়। ওই কারেন্টের বিলের টাকা আমার ছেলে রাখে। আমার প্রতিপক্ষ আমার এবং আমার ছেলের সুনাম নষ্ট করার জন্য মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ করছে।

‎এবিষয়ে তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। চাঁদাবাজ যেই হউক এর সত্যতা ফেলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

 


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ