স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের জৈন্তাপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। দিনে দিনে তার এ বাণিজ্যে ফুলেফেঁপে উঠছে বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গত শনিবার (২৮ জুন) রাতে জৈন্তাপুর থানাপুলিশ অভিযান চালায় নিজপাট ইউনিয়নের ঘিলাতৈল মহিষমারা হাওরে।এসময় অভিযানে ১০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ৭টি মহিষ আটক করা হয়।
এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় প্রথমে ৮ জনকে আসামী করা হয়েছিল। কিন্তু পরে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে দু’জনের নাম প্রত্যাহার করে নিরিহ দুজনের নাম সংযুক্ত করা হয় ।জানা যায়, চোরাচালান আটক বা জব্দের পর দায়েরকৃত মামলায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নাম সংযোজন ও বিয়োজন করেন জৈন্তাপুর থানার ওসি আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান। এতে অনেক নিরিহ মানুষ আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বিনাদোষে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ওই ৭টি মহিষের মালিক মো. আব্দুল মালিক তিনিই ওসিকে এই টাকা দিয়েছেন ।মামলার অভিযোগপত্রে প্রথমে ভূক্তভোগীকে ৩নং আসামী করা হয়েছিল। পরে টাকার বিনিময়ে দু’জনের নাম প্রত্যাহারের সাথে সাথে নিজের নাম ৩ থেকে পিছিয়ে ৮নং এ নিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি জানাজানি হলে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ করেন এবং ক্ষোভ ঝাড়েন।আব্দুল মালিক এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছেনা বলে জানা যায় ।
মামলায় পরে অন্তর্ভুক্ত করা নিরিহ দু’জনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে এ প্রতিবেদকের। যার অডিও ক্লিপ এই প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত। তারা হলেন, লালা মিয়ার ছেলে রায়হান পারভেজ ও বাসির আহমদ। তারা জানান, চোরাকারবারের সাথে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অথচ ওসি টাকা খেয়ে দু’জনের নাম বাদ দিয়ে তাদের নাম সংযুক্ত করেছেন। এতে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
তারা আরও জানান, আব্দুল মালিকই গরুগুলোর আসল মালিক। টাকার বিনিময়ে ওসি ৩নং আসামী থেকে তার নাম ৮ নাম্বারে দিয়ে দেন । আরও দু’জনের নামও বাদ দেয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে। ওসি আমাদের মতো নিরিহ মানুষের নাম সংযুক্ত করেছেন কেবল বাণিজ্যের জন্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে,নিজের মামলা বাণিজ্য ঢাকতে ওসি স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে চলেন। জৈন্তাপুরের অন্তত ৪০ জন সাংবাদিককে তিনি নিয়মিত মাসোহারা দেন- এটা অনেকটা অপেন সিক্রেট বিষয়।
ভুক্তভোগীরা দ্রুত ওসি আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করতে সিলেটের পুলিশ সুপার ও সিলেট রেঞ্জের ডিআইজির প্রতি আহ্বান জানান।