সিলেট বুলেটিন ডেস্ক:
নোয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে হেনস্তার ঘটনায় প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে জখম করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। রোববার দুপুরে সদর উপজেলার বাঁধেরহাট আবদুল মালেক উকিল ডিগ্রি কলেজের নতুন ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে।
আহত কলিম উল্যাহ পাটোয়ারী (৫০) ৩ নম্বর নোয়ান্নই ইউনিয়নের গোরাপুর গ্রামের প্রয়াত নুরুজ্জামান পাটোয়ারীর ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং বাঁধেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী কলিম উল্যাহ পাটোয়ারীর মেয়ে আবদুল মালেক উকিল ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। দুপুর একটার দিকে মেয়ের সরকারি উপবৃত্তির ফরমের জন্য কলেজের নতুন ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন কলিম উল্যাহ। এ সময় কয়েকজন বখাটে কিশোর ক্যাম্পাসের পাশে কলেজের এক ছাত্রীকে স্থানীয় এক যুবকের সাথে আটকে রেখে হেনস্তা করছিল। বিষয়টি কলিম উল্যার নজরে এলে তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই কিশোরদের বাধা দেন। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কিশোরদের বাক-বিতন্ডা হয়।
বাঁধেরহাট আবদুল মালেক উকিল ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, কলেজের এক ছাত্রীকে ক্যাম্পাসের বাইরে বখাটেরা আটকে রেখেছে, এই খবর পাওয়ার পর কলেজের দুই স্টাফকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা বখাটেদের কবল থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে কলেজে নিয়ে আসেন। এ সময় কলিম উল্যাহও কলেজে আসেন। এক পর্যায়ে আরিফ নামে এক কিশোর কলেজের ভেতরে প্রবেশ করে একটি কক্ষের সিঁড়িতে ধারালো ক্ষুর জাতীয় কিছু দিয়ে কলিম উল্যাহর হাতে জখম করে। এতে তাঁর হাতের বেশকিছু অংশ ভেতরের দিকে কেটে যায় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। দ্রুত তাঁকে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সন্ধ্যার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নোয়ান্নই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার (ইউপি সদস্য) মো. জামাল উদ্দিন জানান, বাঁধেরহাট এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা দীর্ঘদিন থেকে স্কুল কলেজে যাওয়া আসার সময় ছাত্রীদের নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছে। যেকোনো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেয় এবং যাকে-তাকে মারধর করে। ভুক্তভোগী কলিম উল্যাহর মেয়ে কলেজে যাওয়া-আসার সময় ওই কিশোররা তাকেও অনেকদিন থেকে উত্যক্ত করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী কলিম উল্যাহর মেয়ে ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী জানান, কলেজে যাওয়া–আসার সময় ওই কিশোররা তাকেও অনেকদিন থেকে উত্যক্ত করে আসছে। ঝামেলা বাড়ার ভয়ে সে তার বাবাকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। তবে, আজকের ঘটনার আগে বাবাকে ওই কিশোরদের বিষয়ে সতর্ক করে।
এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এ ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।