সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ফতেপুর এলাকায় পানি নিষ্কাশনের একমাত্র সরকারি খাল দখল করে ব্যক্তিগত সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, খালটি বন্ধ হয়ে গেলে বর্ষা মৌসুমে কয়েক শত বিঘা জমি পানিতে ডুবে যাবে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে খালের জায়গা ভরাট করে ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চান্দহর ইউনিয়নের ফতেপুর এলাকার মো. দ্বীন ইসলাম ও ফরিদা বেগমের বাড়িতে যাতায়াতের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি প্রকল্পের আওতায় রাস্তা নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এলাকাবাসী খাল দখলের আশঙ্কায় ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে পরিষদ প্রকল্পটি বাতিল করে। তবে পরবর্তীতে কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই ব্যক্তি উদ্যোগে ফের শুরু হয় রাস্তা নির্মাণের কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খালের ওপর বালু ও মাটি ফেলে ভরাটের কাজ চলছে এবং তার ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ব্যক্তিগত সড়ক। ফলে পানি চলাচলের স্বাভাবিক পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, এতে পুরো গ্রামে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে।
ফতেপুর গ্রামের কৃষক আবু বক্কর বলেন, এই খাল দিয়ে আমাদের পুরো এলাকার পানি বের হয়। এখন যদি এটা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে কৃষিজমিতে পানি জমে থাকবে। আমাদের তিন ফসলি জমিতে কিছুই হবে না। চান্দহর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ বলেন,
ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম ও ফরিদা বেগম মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে খাল দখল করে এই রাস্তা নির্মাণ করছেন। আমরা দ্রুত রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করে খাল পুনরুদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ও প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, খাল ভরাটের কারণে শুধু কৃষিই নয়, এলাকার সামগ্রিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পানি নিষ্কাশন না হলে বসতবাড়িতেও পানি ঢুকে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম বলেন, ওই এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি রাস্তার জন্য প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে সেটি বাতিল করা হয়েছে। এখন ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে আমি ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণের সঙ্গে জড়িত নই। সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, সরকারি খাল দখল করে রাস্তা নির্মাণ সম্পূর্ণ অবৈধ। এবিষয়ে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।