শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুর শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শেষ না হতেই বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে বাঁধের পাড়ের শতশত মানুষ আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন। বাঁধ নির্মাণ কাজেও ধীরগতির ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। জানা যায়, গত বছর অবিরাম বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে মহারশি নদীর বিভিন্ন স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। এসব বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করে কয়েক শত ঘর-বাড়ি রাস্তা-ঘাট ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে ১ হাজারের বেশি মানুষ। এর মধ্যে সিংহভাগ গৃহহীন পরিবার তাদের বিধ্বস্ত ঘর-বাড়ী সংস্কার কর্তে স্বক্ষম হলেও অনেই আজও তাদের বিধ্বস্ত বাড়িঘর সংস্কার করতে পারেনি। অপরদিকে গত বছর মহারশি নদীর বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড । জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর পূর্ব পাশে বিভিন্ন স্থানে ২১৬০ মিটার ও পশ্চিম পাশের বিভিন্ন স্থানে ১৩৪০ মিটার কাজ হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারও নিয়োগ দেয়া হয়। জানা গেছে, গত দুই মাস পুর্বে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু ও করে। কিন্তু নির্মাণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। স্থানীয়দের অভিযোগ যে কাজে সময় লাগার কথা ১ সপ্তাহ। কিন্তু সে কাজ গত দুই মাসেও শেষ হয়নি। কাজ চলছে ধীরগতিতে। ফলে আকাশে মেঘ দেখলেই মহারশি নদীর বাঁধের পাড়ের মানুষের মাঝে আতংক দেথা দেয়। এছাড়া মাটি দিয়ে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের কথা থাকলেও বালু ও মাটি মিশ্রিত বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বাঁধ নির্মানের জন্য মাটি দেয়ার উদ্দেশ্যে ঠিকাদারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। তারা ভেকু দিয়ে নদীর পাড় কেটে ও নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ও বালু মিশ্রিত মাটি ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে আসছেন। ঠিকাদার এস বালু দিয়েই বাঁধ নির্মাণ কাজ করে আসছেন । মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কথা থাকলেও বাঁধ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে বালু দিয়ে । পাইলিং করা হচ্ছে একেবারেই নিম্নমানের কাঠ দিয়ে । বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ না হওয়ায় হাজার হাজার পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ করায় দিঘীরপাড় এলাকায় ইতিমধ্যেই বাঁধে দেখা দিয়েছে ফাটল। ফলে বাঁধের পরের লোকজন আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ বালু দিয়ে ভাত নির্মাণ করায় ফলে বেড়িবাঁধ সংস্কারে সরকারের উদ্দেশ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে । অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারের সাথে মাটি দেয়ার চুক্তিব্ধ হওয়া প্রভাবশালী মহল বাঁধ নির্মাণ কাজের অযুহাত দেখিয়ে মহারশি নদীর পাড় কেটে ও নদী থেকে অবাধে বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে। এক মাহিন্দ্র বালু রাস্তায় দেয়া হচ্ছে। আর ৫০ মাহিন্দ্র বালু বিক্রি করা হচ্ছে । অভিযোগ রয়েছে বালু উত্তোলনকারিরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ চাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও সাহস পান না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেয়া হলেও মানছেন না বালু লুটপাটকারিরা। নদীর পাড় কেটে অবাধে বালু লুটপাটের ফলে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পরেছে নদীর পাড়। হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে পরিবেশের ভারসাম্য। এ বিষয়ে ঠিকাদার মিলন মিয়া বলেন, বলেন আমাদের সাথে মাটি দেয়ার চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন স্থানীয়রা।বলেন তারা কোত্থেকে মাটি দিবেন সেটা তাদের বিষয়। পানী উন্নয় বোর্ডের শেরপুরের নির্বাহী প্রকোশলী মো,আখিনুজ্জামান বলেন বাঁধা নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । বালু সরিয়ে মাটি দেয়ার পর আবার নতুন করে কাজ শুরু করা হবে । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি বারবার বাঁধা দেয়া হয়েছে। এরপরেও নদী থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।