খুলনা প্রতিনিধি:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক এবং সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ সাকিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমানকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (৩ মে) বিকালে অনুষ্ঠিত ২৩১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় সকল সদস্য এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত তথ্য, উপাত্ত এবং সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে, তাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং তার স্নাতক ডিগ্রির সনদপত্র সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে যতক্ষণ না পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত আসে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও জানিয়েছে, ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত ছাত্র নোমানের বিরুদ্ধে এটেম্পট টু মার্ডারের মামলা করা হবে। এছাড়া, শৃঙ্খলা বিধিমতো একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা গভীর রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং অভিযুক্ত ছাত্রকে ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার দাবি জানান। আহত শিক্ষক হাসান মাহমুদ সাকিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিটি মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, “এই ধরনের ঘটনা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা এবং সুনামের পরিপন্থী। আমরা ইতোমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং দোষী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রশাসন সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি আমরা একমত।”