নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনার বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের পূর্ব চরপাড় ৬ নং ওয়ার্ডের মৃত নয়াব আলীর মেয়ে জ্যোস্না আক্তার( ৫৪) জন্মথেকেই বোবা। এখন ১০ বছর ধরে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে আরও অসহায় হয়ে গেছে। অভাবের তাড়নায় নিজের বসতভিটা মৃত্যুর আগেই বিক্রি করে দিয়েছে নয়াব আলী। নয়াব আলী গত আট বছর আগে স্ত্রী ও বোবা অন্ধ মেয়েকে রেখে মারা গেছে। বর্তমানে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে মা ও মেয়ে। দীর্ঘ দিন যাবৎ সংসারের কাজ করতে করতে এখনও অনুমান করে রান্নাবান্না, মাছতরকারি কাটা, গোসল করা থেকে শুরু করে কাঁথাও সেলাতে পারে অন্ধ জ্যোস্না আক্তার।
অন্ধের মা মালেকা আক্তার বলেন সংগ্রামের সময় রোজার মাসে আমার এই অভাগী মেয়ের জন্ম হয়েছিলো। জন্ম হয়েছে কার্তিক মাসে দেশ স্বাধীন হয়েছে অগ্রহায়ণ মাসে। জন্ম থেকেই আমার মেয়েটি বোবা। এখন ১০ বছর ধরে মেয়েটি অন্ধ হয়ে গেছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। ভাল চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো আমার মেয়েটা পৃথিবীটা আবার দেখে যেতো পারতো। চিকিৎসা করাবো দূরের কথা থাকি অন্যের বাড়িতে, পেট চালানোটাই দায়। সরকারি কোন ঘর পাননি জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন ১ লাখ টাকা কোথায় থেকে দিবো। টাকা ছাড়া ঘর পাওয়া যায় না। অন্যের ঘরে থাকা যে কি শান্তি তা আমার চেয়ে বেশি কে জানে।
ঘরের মালিক নাসিমা আক্তার বলেন, দুই বছর ধরে মা ও অন্ধ মেয়ে আমাদের বাড়িতে থাকে। টাকার জন্য চোখের চিকিৎসা করাতে পারছে। ভাল চিকিৎসা করাতে পারনে চোখগুলো ভাল হয়ে যেতো। আর কত মানুষ সরকারি ঘর পাচ্ছে কিন্তু এই অসহায় দুটি মানুষ কারও চোখে পড়ে না।
মোঃ সিদ্দিক মিয়া বলেন,মালেকা আক্তার আমার চাচি হয়। এই বোবা ও অন্ধ মেয়েটাকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। মালেকা আক্তারের বাবার বাড়ি বাউসী ইউনিয়নের শেখের পাড়া গ্রামে। চাচির কোন ছেলে সন্তান নেই, এই অন্ধ বোবা মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এই মুহূর্তে সরকারি একটি ঘর পেলে একটু সুখে শান্তিতে থাকতে পারতো।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বারহাট্টা উপজেলা শাখার সেক্রেটারি আব্দুল বাছির খান বলেন, আমরা এই পরিবারের খোঁজ পেয়েছি। খুব শিগগিরই আমাদের সংগঠন থেকে তাদের সহযোগিতার ব্যবস্থা করবো।