নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁ: নওগাঁর নিয়ামতপুরে তাড়াহুড়ো করে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে সিজারিয়ান অপারেশন (অস্ত্রোপচার) করার অভিযোগ উঠেছে এক ক্লিনিকের বিরুদ্ধে। এতে জীবিত অবস্থায় জন্ম নেওয়ার পর নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, গর্ভের শিশু বেঁচে নেই বলে দ্রুত অপারেশন করায় নিয়ামতপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিশুটিকে দাফন করতে গিয়ে জানা যায় সে বেঁচে আছে। কিন্তু পরে মারা যায়।
জানা গেছে, শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গোপাল চক এলাকার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগমের (২৫) রক্তক্ষরণ হলে যন্ত্রণা নিয়ে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ইসলাম অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটের বাচ্চা মারা গেছে বলে রোগীর স্বজনদের জানান এবং দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। তা না করলে প্রসূতিকে বাঁচানো যাবে না বলে তাড়াহুড়ো শুরু করেন। তাঁদের তাড়াহুড়োয় অপারেশন করার জন্য সম্মতি দেন প্রসূতির মা-বাবা। অপারেশন শেষে ক্লিনিক মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে প্যাকিং করে রাত ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। ভুলক্রমে প্যাকিং বাক্সে অপারেশনের কাঁচিও রেখে দেন। বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যরা দাফনের প্রস্তুতির সময় হঠাৎ সেই নবজাতক নড়ে ওঠে। শিশুটির প্রাণ আছে বুঝতে পেরে দ্রুতই উপজেলা সদরে আসেন। থানায় বিষয়টি অবহিত করলে তারা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেয়। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কায়সার রহমান শিশুটি জীবিত রয়েছে বলে জানান। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তবে রামেক নেওয়া হলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই অন্তঃসত্ত্বার মা নাজমা বলেন, ‘ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের তাড়াহুড়োর কারণে দ্রুত অপারেশন করা হয়েছে। শিশুটি মারা গেছে বলে আমাদের কাছে তুলে দেয়। দাফন করার উদ্দেশ্যে নিয়ে গেলে শিশুটি নড়ে ওঠে। আমরা খুব অসহায় মানুষ, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. কায়সার রহমান বলেন, ‘শিশুটিকে আমি জীবিত অবস্থায় পেয়েছিলাম।’
এ দিকে ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ও তাঁর স্ত্রী পারমিতার দাবি, নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাটি একটি দুর্ঘটনা। তাঁরা বলেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই অপারেশন করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, নবজাতককে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।#