ভৈরবের শুম্ভুপুরে খন্দকার ফাউন্ডেশন গুণিজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত 

রিপোর্ট: মোঃ ছাবির উদ্দিন রাজু ভৈরব কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  মানুষের জীবনে কিছু আয়োজন ঠিক নিসর্গের জ্যোৎস্নার মতো—নিঃশব্দে চারদিকে আলো ছড়িয়ে দেয়। ভৈরবে খন্দকার ফাউন্ডেশন আয়োজিত গুণিজন সংবর্ধনা ২০২৫ ছিল এমনই এক আলোকিত বিকেল, যেখানে সম্মান, কৃতজ্ঞতা, মানবিকতা ও সমাজসেবার পবিত্রতম অনুভূতি মিলেছিল এক অনন্য মিলনমেলায়।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় শম্ভুপুর খন্দকার মোড়ে অনুষ্ঠিত এ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবার অগ্রপথিক, রাজনীতির পরিচ্ছন্ন চর্চার ধারক-বাহক এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে স্বজনহারা মানুষ, দরিদ্র পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে থেকেছেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন—

বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ মোঃ শরীফুল আলম।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন—

“মানুষ যখন নিজের জন্য নয়, সমাজের জন্য কাজ করে—তখন তার প্রতিটি পদক্ষেপই হয়ে ওঠে ইতিহাসের সারথি। আমি রাজনীতিতে নিতে আসিনি, দিতে এসেছি।”

তিনি আরও বলেন—

“গত সরকার ভৈরবকে মাদক ও ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। আমি বহুদিন ধরে শিক্ষা, খেলাধুলা, রাস্তাঘাটসহ ভৈরব কুলিয়ারচরবাসীর নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে নির্ভীকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”

“শিবপুর ইউনিয়নে বিএনপির দুই কীর্তিমান নেতা— বিএনপির মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আব্দুল লতিফ ভূইয়া ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ভৈরব উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ভৈরব উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত গিয়াস উদ্দিনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আমি আমার দায়িত্ববোধের কথা স্মরণ করছি।”

“বিদেশে গিয়ে আমি দেখেছি, প্রবাসীরা কত কষ্টে জীবনযাপন করে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরে যাত্রীদের সাথে বিমানবন্দরে চাকুরীরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অসদাচারণ এর প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে এবং আমাকে কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী করেন—তাহলে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো থেকে শুরু করে যুব সমাজ ও অসহায় পরিবারের পাশে থাকব সর্বশক্তি দিয়ে।”

তিনি দেশনায়ক তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ দোয়ার আহ্বান জানান। বিশেষ অতিথি ছিলেন— ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম,পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র হাজী শাহিন,পৌর বিএনপির নির্বাহী সদস্য, বিশিষ্ট সমাজসেবক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ, শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহ আলম।

তাঁরা বলেন— “খন্দকার ফাউন্ডেশন আজ সমাজের এক বাতিঘর। একটি পরিবার যখন সমাজের পাশে দাঁড়ায়, তখন পুরো সমাজটাই আশার পাখির ডানায় ভর করে সামনে এগিয়ে যায়।”

সম্মাননার মূল প্রাণ—বীরত্ব, দানশীলতা ও শিক্ষার আলো ছড়ানো মানুষরা এই সংবর্ধনায় সম্মাননা দেওয়া হয় সমাজের সেই আলোকিত মানুষদের, যারা জমি দান, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মাদ্রাসা পরিচালনা, এতিমখানা নির্মাণ, কিংবা মানবতার তাগিদে জীবন উৎসর্গ করেছেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে যাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ এর জমিদাতা আমিনুল ইসলাম চৌধুরি ও হাজী সিরাজ মিয়ার পক্ষে গ্রহণকারী আমিনুল ইসলাম চৌধুরি, শম্ভুপুর দারুচ্ছুন্নাত নেছারিয়া ফাযিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাও: আঃ বারী খন্দকার (রহ) এর পক্ষে গ্রহণকারী মাহবুবুর রহমান, আফছর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম গিয়াস উদ্দিন এর পক্ষে গ্রহণকারী মরহুম গিয়াস উদ্দিনের পরিবার, জামালপুর (টেকনিক্যাল) উচ্চ বিদ্যালয় ও ছনছাড়া এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সংসদ সদস্য ডাক্তার আব্দুল লতিফ ভূইয়ার পক্ষে গ্রহণকারী আঃ হাকিম প্রদান,

আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাজী মোহাম্মদ ফালু মিয়ার পক্ষে গ্রহণকারী শামসু মিয়া, টানকৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা/দাতা ছিদ্দিক মিয়া, ফাড়িরঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা/দাতা হাজী হারুনুর রশিদ খান এর পক্ষে গ্রহণকারী ইউসুফ খান,

শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা/দাতার পক্ষে গ্রহণকারী নীখিল চন্দ্র বর্মন,শম্ভুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতার পক্ষে , গ্রহণকারী বোরহান উদ্দিন,জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা/দাতার পক্ষে

গ্রহণকারী জামেদা বেগম, ভাটি কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা/দাতার পক্ষে গ্রহণকারী জসিম আহমদ, হাজী ইউনুছ আলী বেসরকারি বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতার পক্ষে গ্রহণকারী ফয়েজ উদ্দিন, মাইন উদ্দিন, হাজী দুয়া মিয়া। খাদিজাতুল কুবরা মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার পক্ষে গ্রহণকারী হাজী মুহা নিয়া,জমিয়াতুল মদিনা ফরিদা সাত্তার দরসে নেজামী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার পক্ষে গ্রহণকারী ব্যাসেল আহমদ সোহান, প্রতিষ্ঠাতা, খন্দকার এতিমখানার পক্ষ থেকে গ্রহণকারী আমান উল্লাহ খন্দকার, প্রতিষ্ঠাতা, খন্দকার হিফজুল কোরআন মাদ্রাসার পক্ষে গ্রহণকারী নাসির উদ্দিন পাঞ্জ,প্রতিষ্ঠাতা, গাউসুল আজম সুন্নিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার পক্ষে গ্রহণকারী আলহাজ্ব রুহুল আমিন খন্দকার, রণাঙ্গনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে শহীদ খোর্শিদ আলম ও শহীদ আলকাছ মিয়া, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এন্ড কালচারাল এসোসিয়েশন ও বাংলা স্কুল (ইতালি) পক্ষে গ্রহণকারী ফুরুল আমিন খন্দকার, জামালপুর গাংকুলহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর পক্ষে গ্রহণকারী নুরুল আমিন খন্দকার।

খন্দকার ফাউন্ডেশনের মানবিক কার্যক্রম—মানুষের ঘরে ঘরে আলো জ্বালানোর অঙ্গিকার প্রতি বছর খন্দকার ফাউন্ডেশন—অসহায় পরিবারকে ঘর নির্মাণ,দরিদ্র মেয়েদের বিয়ের সহায়তা,যাকাত বিতরণ,বাৎসরিক খাবার ও ঈদ উপহার,রমজানে ইফতার প্যাকেট ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে থাকে।

২০২৬ সাল থেকে অতিদরিদ্র ৩টি পরিবারকে ঘর, দোকানসহ স্বাবলম্বী করে তোলা হবে বলে আয়োজকরা ঘোষণা দেন।অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন—

খন্দকার ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ও উলামা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান খন্দকার।

সঞ্চালনায় ছিলেন, খন্দকার ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব মোঃ খন্দকার রফিকুল আমীন ও শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল বাকের ঝলক ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার নেয়ামত উল্লাহ রনি।

তাঁরা বলেন— “এই সম্মাননা শুধু দাতাদের নয়—সকল মানবিক মানুষের। আমাদের দরজা সবসময় খোলা, যারা মানুষের পাশে দাঁড়ান তাঁরা-ই প্রকৃত গুণী।” মানবতার নদী বইছে শম্ভুপুরে যেমন নদী তার গতিপথে তৃষ্ণার্থ মানুষকে জল দিয়ে আশীর্বাদ করে,

তেমনি খন্দকার ফাউন্ডেশন মানুষের দুঃখে-দুর্দশায় পাশে দাঁড়িয়ে সমাজে নতুন করে মানবতার বীজ বপন করছে। আজকের এই সম্মাননা শুধু সনদ নয়—এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবিক, দায়িত্ববান ও সমাজমুখী হওয়ার প্রেরণার দিশারি।