সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের পাটলাই নদীতে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চুনাপাথর কয়লা ও বিভিন্নপণ্যবাহী নৌযান থেকে খাস কালকেশন করছে সরকার। মামলার বাদীর অভিযোগ উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়ন তহশীলদারের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মিলে নদী থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা খাস কলেকশন করলে সরকারে নিধারিত প্রতি নৌকা থেকে যেখোনে ৫০০ শত টাকা হারে টোলা আদায়ের কথা সেখানে প্রতি নৌকা থেকে ৫ হাজার,দশহাজার,বিশহাজার করে টোলা আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ দেবোত্তর সূত্রে পাওয়া উত্তররাধিকারী শ্রী শ্রী মদন মোহন জিউর এস্টেইটের সেবায়েত রাজন চৌধুরী । এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন দেবোত্তর স্টেটের উত্তরাধিকাররা। অন্যদিকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত টোল।
মামলা জনিত কারণে তাহিরপুরের শ্রীপুর বাজার নৌকাঘাট ও ডাম্পের বাজার নৌকাঘাট ইজারা দিতে পারেনি সরকার। তাই উপজেলা প্রশসানের খাস কালেকশন কমিটির সিদ্ধান্ত মতে দুটি ঘাটে খাস কালেকশনের সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন। সরকারি টোল আদায়ের নীতিমালা অনুযায়ী টোল আদায়ের কথা থাকলেও প্রতিদিন দুটি বড়ছড়া বাগলী ও চারাগাও শুল্ক স্টেশনে আমদানি করা কয়লা ও চুনপাথর বাহী নৌযান থেকে দ্বিগুন তিনগুণ হারে টাকা আদায় করা হচ্ছে । নৌকার মাঝিরা চাহিদা মতো টাকা না দিলে শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হন। প্রতিদিন এই রুটে ছোট বড় ৫০ টি নৌকা বাল্কহেড কয়লা ও চূনাপাথর নিয়ে চলাচল করে। নৌকা গুলো শুল্ক স্টেশন থেকে ছোট ছোট নৌকায় করে বড় বাল্কহেড নৌকা বোঝাই করে ডাম্পের বাজার ও কামালপুর ও শ্রীপুর ঘাট থেকে ছেড়ে আসার পর পাটলাই নদীর মুজরাই গ্রামে খাস সরকারের পক্ষে খাস কালেকশন করেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তারা ঘাটে নৌকা ভিড়িয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন কিন্তু সরকারি রসিদে কম টাকা লিখেন।
নৌকার মাঝি ও মালিকদের অভিযোগ ডাম্পের বাজার থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরের মেন্দিয়াতা পর্যন্ত খাস কালেকশন, বিআইডব্লিউআইটিএ ও ইউনিয়ন টোলের আদায়েল নামে অতিরিক্তি টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শ্রী শ্রী মদন মোহন জিউর এস্টেইটের ইজারাদার মোঃ কামরুজ্জামান ও ৩ জন নৌযান মালিক শ্রমিক জানান, স্বাধীনতার ৪০ বছর ধরে শ্রী শ্রী মদন মোহন জিউর এস্টেইটের মাধ্যমে এই ঘাটগুলো থেকে টোল আদায় করে ঐ মন্দির সংকারের পাশাপাশি উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হতো। কিন্তু স্থানীয় তহশীলদারের মাধ্যমে একটি চক্র সরকারের নামে ইজারার নাম ধরে যেখানে প্রতি নৌকা থেকে ৫০০ শত টাকা হারে টোল আদায়ের কথা সেখানে নৌকা আটকিয়ে মাঝিদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রভারশালীরা ১০ হাজার ২০ হাজার ও ৫ হাজার টাকা হারে টোল আদায়ের নামে চলছে নীরব চাঁদাবাজি। টাকা না দিলে মাঝিদেরকে শারীরিকভাবে মারধোর করা হয় বলে অভিযোগ তাদের।
এ ব্যাপারে,তাহিরপুর শ্রী শ্রী মদন মোহন দেবোত্তর জিউর এস্টেইটের সেবায়েত রাজন চৌধুর বলেন,আমাদের এই হিন্দু সংঘঠনটি স্বাধীনতার ৪০ বছর ধরে এই ঘাটগুলো থেকে মন্দির সংস্কারের জন্য টোল আদায় করে আসছিলাম। কিন্তু এবার উপজেলা প্রশাসন উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের তহশীলদার আশীষ চক্রবতীর মাধ্যমে একটি প্রভাবশালী চক্র আমাদের লেসি কামরুজ্জামানকে ঘাটে টোল আদায় করতে দিচ্ছে না। তারা সরকারের নিধারিত রেইটে টোল আদায় না করে ২০ হাজার.১০ হাজার ও ৫ হাজার টাকা হারে চাঁদাবাজি করে সরকারের কোষাগারে নামমাত্র টোল জমাকরে বাকি টাকা তারা আত্মসাত করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এই তহশীলদার ইতিমধ্যে বিপুল টাকা কামিয়ে নিয়েছেন এই ঘাট দুটি হতে। অবলম্বে তার লেসি কামরুজ্জামানকে দেবোত্তরের নামে টোল আদায় করতে অনুমতি প্রদানের জন্য সরকার ও প্রশাসনের নিকট দাবী জানান।
তিনি জানান,এই শ্রীপুর নৌকাঘাট,ডাম্পের বাজার এই দুটি ঘাট হতে এই হিন্দু সংগঠনের মন্দির ও বাড়িঘর সংস্কারের জন্য টোল আদায় করে আসছিলেন বিগত ৪০ বছর ধরে। কিন্তু এবার তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্থানীয় শ্রীপুর ইউনিয়ন তহশীলদার আশীষ কুমার চক্রবর্তীর মাধ্যমে একটি প্রভাবশালী চক্র দিয়ে প্রতিদিন প্রতিটি স্ট্রীলবডি নৌকায় করে কয়লা,চুনাপাথর পরিবহনের সময় যেখানে প্রতি বডি থেকে ৫০০ শত টাকা করে টোল আদায়ের কথা সেখানে প্রতি বডি হতে ২০হাজার,১৫ হাজার ৫ ও ১০ হাজার করে নৌকা আটকিয়ে টোলের নামে চাদাঁবাজি করা হচ্ছে। নৌকার মাঝিরা টাকা না দিলে নৌকা আটক করে শ্রমিকদের উপর শারীরিক নির্যাতন ও করা হয় বলে শ্রমিক ও সেবায়েত জানান।
এদিকে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম, বলেন অতিরিক্ত টোল আদায়ের নামে কেউ অতিরিক্ত টোল আদায় তা চাঁদাবাজির সামিল। কেউ এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন মামলা জনিত কারণে মহালটি ইজারা দিতে না পারায় সরকার কোটি কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। শ্রীপুর দেবোত্তোর স্টেইটের দায়ের করা উচ্চ আদালতের আদেশে কোথাও বলা হয়নি তাদের খাস কালেকশন করার কথা। সরকার আইন অনুযায়ী খাস কালেকশন করছে। তাহিরপুর উপজেলায় চারটি শুল্ক স্টেশন রয়েছে এসব স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক ভারত থেকে কয়লা চূনাপাথর পরিবহন করে স্টেশনে নিয়ে আসে।