স্টাফ রিপোর্টার:
নগরীর দক্ষিণ কাজলশাহ নবাবরোড রেনু মঞ্জিলে তানিয়া আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ ওঠেছে স্বামী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। দাবি করা যৌতুকের টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে না দেওয়ায় মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে তাকে কুপিয়ে জখম করার এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে দক্ষিণ কাজলশাহ নবাব রোডের রেনু মঞ্জিলে ভাড়াটিয়া লিয়াকত আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে ঘাসিটুলা সবুজসেনা পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা মোঃ আনোয়ার হোসেনের মেয়ে তানিয়া আক্তারের সম্পর্ক করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করে বর্তমানে তার বয়স তিন বছর। বিগত কয়েক বছর তারা সুখে শান্তিতে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করলেও পরবর্তীতে তানিয়াকে বিদেশে যাওয়ার জন্য যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে তার স্বামী জাহিদুল ইসলাম। বিয়ে ও বিয়ের পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে নগদ ১ লাখ টাকা ও দুবাই যাওয়ার জন্য দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার, মোটর সাইকেল কেনার জন্য যৌতুক হিসেবে জাহিদুল ইসলামকে দেয় তানিয়া আক্তারের বাবা।
পরবর্তীতে ২৯/৪/২৫ ইং রাত ১১টায় পুনরায় যৌতুকের দাবিতে তানিয়া আক্তারকে ছুরি দিয়ে মারধর করে প্রাণে মারা চেষ্টা করে ঘর থেকে বের করে দিলে তানিয়ার বাবা এসে রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয়দের সহায়তায় পরের দিন ৩০/৪/২৫ ইং সকালে ওসমানী হাসপাতালে ওসিসি বিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। চিকিৎসা শেষে তানিয়া বাদী হয়ে কতোয়ালী মডেল থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দায়ের করা হয় যার নং-২৩১/২০২৫ইং ধারা ১১(গ)৩০, ২০০০ইং সংশোধীত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩। মামলার সৃত্রে জানা যায়, বাবার বাড়ি থেকে টাকা নেয়ার জন্য তানিয়া শশুর শাশুরী ও চাপ প্রয়োগ করে বলতো আমার ছেলের সাথে সম্পর্ক করে বিয়ে হয়েছে ফার্নিচার বা বিয়ের কোন জিনিস আমরা পাইনি। এতে যৌতুকের দাবিতে জাহিদুল ইসলাম স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতন করতো। তানিয়া যৌতুকের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে স্বামী জাহিদুল ইসলাম. শশুর লিয়াকত আলী, শাশুরী মোছাঃ জাহানারা বেগম, ননদ সাবিনা আক্তার কে আসামী করে কতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করে।
এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার তানিয়া আক্তার বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য ছয় লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে আমার ওপর হামলা চালানো হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে স্থানীয় ও আমার পরিবারের লোকজন এসে ওসমানী হাসপাতালে ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।
ওসমানী হাসপাতালে ওসিসি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক বলেন, গলায় চাপ দিয়ে প্রাণে মারা চেষ্টা করা হয়েছে। একজন স্ত্রীকে এভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে যা চিন্তা করাও যায় না।