বিশেষ প্রতিবেদক:
সিলেটের কানাইঘাট থানা সদর অনেক আগে থেকেই বুঙ্গার (চোরাচালানের) ট্রানজিট পয়েন্ট। পাহাড়ি-স্থল সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আসা ভারতীয় চোরাই চিনি, গরু, মহিষ, কসমেটিক্স, বিড়ি, মোটরবাইক, মাদক, অস্ত্র সহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য কানাইঘাট সদর থানার সামন হয়েই সিলেট বিভাগ সহ বিভিন্ন জেলায় সাপ্লাই দেওয়া হয়। কানাইঘাট থানা সদরের অদূরেই জকিগন্জ উপজেলার শাহবাগ ও সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক। এ সড়কের শাহবাগ স্টেশন হয়েই গাড়ি দিয়ে চোরাই পণ্য সরবরাহ করা হয়। এদিকে কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ি বোরহান উদ্দিন রোড দিয়ে সিলেটের বাইপাস সড়কে উঠে সিলেট সহ বিভিন্ন জেলায় পৌঁছাতে কোন অসুবিধা হয় না সবচাইতে নিরাপদ রোড হিসেবে বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে । শাহবাগ থেকে জকিগঞ্জ থানা সদর অনেক দুরবর্তী হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাগালে অনেকটা বাইরে। তাই কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট সীমান্ত দিয়ে আনা চোরাই পণ্যের বেশিরভাগ কানাইঘাট সদর ও শাহবাগ স্টেশন দিয়ে নির্বিঘেœ পাচার হয়ে থাকে। গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে আসা পণ্যগুলো দরবস্ত থেকে কানাইঘাট সড়ক হয়ে সুরমা ব্রীজের উপর দিয়ে নিয়ে যওয়া হয়। আবার কানাইঘাটের পূর্ব সীমন্ত এলাকা কারাবাল্লা, ডোনা-মূলাগুল, লক্ষীপ্রসাদ হয়ে আসা ভারতীয় পণ্য নদীপথে কানাইঘাট খেওয়াঘাট দিয়ে সড়কে উঠানো হয়ে থাকে। সম্প্রতি সিলেট-তামাবিল সড়কের হরিপুর বাজারস্থ চোরাচালান কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর অভিযান জোরদার হওয়ায় সীমান্তের ওই তিন থানার সকল পণ্যই দরবস্ত কানাইঘাট হয়েই পাচার হচ্ছে। কানাইঘাট থানা সদর কেন্দ্রিক একটি চোরাচালানী সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই চোরাই পণ্যের সমাহার পাচার হচ্ছে। আর এ সিন্ডিকেটের, নেতৃত্বে রয়েছে কানাইঘাটের বায়মপুরের কুখ্যাত বুঙ্গাড়ী শিব্বির, থানার রামপুরের বুঙ্গাড়ী ছালেহ আহমদ ও পার্শ্ববতী জকিগঞ্জ থানার ঘাটের বাজারের বুঙ্গাড়ী সুমন মেম্বার। মূলত এই তিনজনই প্রশাসন সহ সবকিছুই নিয়ন্ত্রন করেন। তাদের হাতে কানাইঘাট পয়েন্টের সকল চোরাচালানের নিয়ন্ত্রন। আর এইসব চোরাচালানের বখরার লাইনম্যানের দায়িত্ব পালন করেন কানাইঘাট থানার এএসআই মোজাম্মেল হোসেন রিপন। এএসআই রিপনের মাধ্যমেই চোরাকারবারিরা মূলত থানা পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় কিছু নামধারী সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে থাকেন তিনি।
এ বিষয়ে এএসআই মোজাম্মেল হোসন রিপনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লাইনম্যান হওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, আমি থানার সেরেস্তা ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করি, মাঠে আমার কোনো দায়িত্ব নেই। এদিকে গত কিছু দিন আগে চাঁদাবাজীর অভিযোগে নারায়ন নামের এক কনেষ্টবলকে নিয়ে স্যুসাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হলে তাকে অন্যত্র বদরী করা হয়। কিন্তু থানার সকল চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ এখন এ এসআই রিপনের হাতে।