ডেস্ক রিপোর্ট::
সিলেটের চোরাকারবারিদের লাইনম্যান হিসেবে এবার এসএমপি পুলিশের এক কনস্টেবল অবতির্ন হয়েছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্টের পর পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যারা চোরাচালান সিন্ডিকেট চালাতেন তারাও এখন অন্তরালে। আর এই সিন্ডিকেটের সেই ফাঁকা জায়গা দখল নিয়েছেন এবার চোরাকারবারিসহ এসএমপির মোগলাবাজার থানা পুলিশের কনস্টেবল মো. জুনাইদ।
কনস্টেবল জুনাইদের ভাষ্যমতে তাকে টাকা দিলে চোরাইপণ্য বিনা বাধায় মোগলাবাজার সড়ক দিয়ে যাবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। চোরাকারবারিদের সাথে কনস্টেবল মো. জুনাইদের হোয়াটসঅ্যাপে এমন কথোপোকথনের রেকর্ড এসেছে গণমাধ্যমের কাছে। তিনি চোরাকারবারিদের সাথে এমন সখ্যতা গড়েছেন, যে মোগলাবাজার থানার ছাদ থেকে ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে রাস্তা ক্লিয়ার দেখাচ্ছেন তাদের। তিনি দীর্ঘদিন থেকে ওসির নাম ভাঙ্গিয়ে তার এসব কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন।
তার ভাষ্যে চোরাকারবারিদের টাকার এক অংশ দিতে হয় এসএমপির মোগলাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানকে।
সিলেটের সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে মোগলাবাজার সড়ক। চিনি, কসমেটিকস, মাদকসহ বিভিন্ন ভারতীয় পণ্য চোরাইপথে দেশে নিয়ে আসে চোরাকারবারীরা। চোরাকারবারীদের এসব চালান নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছার জন্য পুলিশকে বখরা দিলেই নিরাপদে মোগলাবাজার সড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌছে যায়। তবে এ নিয়ে পুলিশের মত ভিন্ন রয়েছে। পুলিশ বলছে তারা সবসময়ই অভিযান পরিচালনা করে চোরাকারবারিদের মালামাল আটক করছে।
কনস্টেবল মো. জুনাইদের হোয়াটসঅ্যাপের রেকর্ড গুলোতে বলতে শোনাযায়, ‘প্রতি গাড়ি ৫ হাজার টাকা। এরমধ্যে ওসিকে এক অংশ ও তিন ডিউটি পার্টিকে ৩টি অংশ দিতে হয়’। ‘ভাই আমার ডে ডিউটি চলের আর দুইএকদিনে পরে নাইটে পাইবায়। আর এইযে কালকের ৭টা এরআগের ৬টা টাকা দিয়া ক্লিয়ার করিও। আমার এই নাম্বার বিকাশ আছে। দিয়া ক্লিয়ার করিও। আর এখন জামিল ভাই আছে ডিউটির মাঝে দিয়া ক্লিয়ার করিয় নিও সুন্দর করি’। ‘লাইনেতো আর কোনো সমস্যা নাই। টাকা পয়সার দরকার আছে। শরিলটা বালা নায়, সিরামপুর পয়েন্টে আও’।
বিষয়টি জানতে কনস্টেবল মো. জুনাইদের মুঠোফোনে কল করলে তা ব্যস্ত দেখায়।এ বিষয়ে কিছুই জানেন না এসএমপির মোগলাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, তারা সবসময়ই অভিযান পরিচালনা করে চোরাকারবারিদের মালামাল আটক করছেন। পুলিশের নাম ভাঙিয়ে যদি এরকম কেউ কোনো কিছু করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করা হবে।