সিলেটে মন্দিরে শক্তি ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে ২৩ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা
বিশেষ প্রতিবেদক:: সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার এলাকার শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ জিউর আখড়া মন্দিরে শক্তি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে এবার ২৩ জনের বিরুদ্ধে দ্রত বিচার আইনে মামলা করা হয়েছে। মন্দিরের বাসিন্দা ও জিতেন চন্দ্র দেবনাথের স্ত্রী স্মৃতি রানী দেবনাথ আদালতে এ মামলা করেন। বুধবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক শরিফুল হক ফৌজদারি কার্যবিধি ১৭৩ ধারায় প্রতিবেদন দাখিলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। আদেশে তিনি নালিশকীর ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ঘটনাস্থল ধর্মীয় উপসানালয়। এমন সংবেদনশীল স্থানে শক্তি ও অস্ত্র প্রদর্শন ত্রাস সৃষ্টি ও ভয়ভীতি পর্যায়ে পড়ে। এদিকে গত ১ নভেম্বরের ওই ঘটনায় পরদিন হামলার অভিযোগে অপর পক্ষ জিতেন সেনের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন।
স্মৃতি রানী মামলার (কোতয়ালী সি.আর মামলা নং-২৬/২৫) এজাহারে প্রধান আসামি করেন বিভাস গোস্বামী বাপ্পাকে। এছাড়া শিবব্রত ভৌমিক চন্দন, সুদীপ সেন পাপ্পু, মলয় সরকার, কল্লোল জ্যোতি জয়, প্রদীপ কুমার ধর, রাজীব কুমার দে, চন্দন দাসহ ২৩ জনকে অভিযুক্ত করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন-একশ বছর ধরে সেখানে তারা বসবাস করছেন। বিবাদি বিভাস বসু, সুদীপ সেন, মলয় পুরকায়স্ত মন্দির কমিটির কোনো সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক না হয়েও সেবায়েত দাবি করে দেবোত্তর সম্পিত্তি আসামি নিতাই দাসের নিকট বিক্রি করেন। ভুয়া আখড়া কমিটি গঠন করে ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকা আত্মসাত করেন তারা। ২০২৩ সালে এ ঘটনায় রাহুল দেবনাথ বাদি হয়ে মামলা করেন। চলতি বছরে পিবিআই তদন্ত করে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে মন্দির দখলের চেষ্টা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ নভেম্বর মন্দিরে প্রবেশ করে আসামিরা মন্দিরে ত্রাশ সৃষ্টি ও মন্দিরের তালা ভেঙে ফেলে এবং তাদেরকে মারধর করেন। তিনি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দাবি করেন। এদিকে ১ নভেম্বর মন্দিরে অপ্রীতির ঘটনার পর মন্দিরের কমিটির সভাপতি দাবি করে শিবব্রত ভৌমিক কোতোয়ালী থানায় মামলা (নং-৫০৭/২০২৫) করেন। এতে তিনি ওইদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সভাকালে পাল্টা হামলার অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, রাধা গোবিন্দ জিউর আখরার দেবোত্তর সম্পত্তি, মন্দির পরিচালনা কমিটিসহ নানা বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা ও মামলা চলছে। কেউ করেছেন মন্দিরের সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর ও তহবিল তসরুপের অভিযোগে মামলা কেউ বা করেছেন উচ্ছেদের জন্য। সরকার পতনের পর মন্দিরের জায়গা দখরের চেষ্টা করা হয়। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ আদালতে সম্পত্তি হস্তান্তর ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতে মন্দির কমিটির বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বশীলসহ বিভিন্ন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন আখড়ার বাসিন্দা ও ভক্ত রাহুল দেবনাথ। পিবিআই তদন্ত করে ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত এপ্রিলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছেন। এ অবস্থায় তারা গত ১ নভেম্বর মন্দিরে সভা করতে গেলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সেখানে যান। তার মধ্যস্থতায় মন্দিরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বিষয়টি সমাধান তিনি করেন নি বলে জানা গেছে। ফলে উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ নিজাম উদ্দিন, নির্বাহী সম্পাদক : আইয়ুব আলী অফিস ; খান কমপ্লেক্স, সোনারপাড়া, শিবগঞ্জ, সিলেট। যোগাযোগ : প্রকাশক ও সম্পাদক : ০১৭৩৭-৩০৪৭৫১। ই-মেইল : sylhetbuletin@gmail.com
All rights reserved © 2025 sylhet buletin