শিরোনাম
সিলেটের নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিলেন কাজী আখতার উল আলম সোসাইটি অব জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন মৌলভীবাজার জেলা শাখার অভিষেক ও আইডি কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠিত।  সুনামগঞ্জে নতুন পুলিশ সুপারের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে” জেলার চোরাকারবারি, মাদকসহ সবধরনের অপরাধ দমন করার আশ্বাস প্রদান করেন—নবাগত পুলিশ সুপার   বিএনপির চেয়ারপার্সনের সুস্থতা কামনা করে দিরাই বিএনপির ও সহযোগি সংগঠনের উদ্যোগে জগন্নাথ মন্দিরে প্রার্থনা সভা সুনামগঞ্জে খুচরা সার বিক্রেতাদের লাইসেন্স বহাল ও নীতিমালা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন সুনামগঞ্জে দোয়া মাহফিল ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন এড.নুরুল ইসলাম নুরুল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় মানিকগঞ্জে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত। মল্লিকপুর বগি লাইনচ্যুত: তেলবাহী ওয়াগন ছিলো খালি তাই হয়নি ক্ষয়ক্ষতি  বিএনপির চেয়ারপার্সনের সুস্থতা কামনা করে সুনামগঞ্জ-৪(সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত সিলেট নগরীর বন্দরবাজারে তালহা রেস্ট হাউজে ডিবির অ ভি যা ন ৫ জন গ্রে ফ তা র
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:১০ পূর্বাহ্ন

নগরীর খাদিমনগর চা-বাগানে কবিরাজ মাসুক মিয়ার নেতৃত্বে সক্রিয় দখলবাজ চক্র, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার / ৮৯ Time View
Update : রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫

নগরীর খাদিমনগর চা-বাগানে কবিরাজ মাসুক মিয়ার নেতৃত্বে সক্রিয় দখলবাজ চক্র, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ

 

বিশেষ প্রতিবেদক:: সিলেটের শাহপরান এলাকার খাদিমনগর চা-বাগানে চলছে জমি দখল ও বিক্রির উৎসব। জাল দলিল তৈরি করে টিলা কেটে সরকারি ও বাগানের জমি প্লট আকারে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী দখলবাজ চক্র।

সরেজমিন তদন্তে এসব অনিয়মের সত্যতা মিললেও স্থানীয় প্রশাসন এখনও পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। বরং অভিযানের পর উচ্ছেদ করা জমিও পুনরায় দখল হয়ে যাচ্ছে।

ভণ্ড কবিরাজের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা দখলবাজ চক্র-স্থানীয় সূত্র জানায়, কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা ভণ্ড কবিরাজ মাসুক মিয়া সিলেটে এসে প্রথমে সিএনজি চালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিছুদিন পর নিজেকে ‘কবিরাজ’ দাবি করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন তিনি।

মাসুকের নেতৃত্বে শাহাজান, উমর, লিটন, খোকন, মইন, ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন আনুসহ কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে ওঠে একটি শক্তিশালী চক্র। এই চক্রটি খাদিমনগর চা-বাগানের টিলা কেটে মাটি বিক্রি ও প্লট তৈরি করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অবৈধভাবে বিক্রি করছে।

সরকারি অভিযানের পরও ফের দখল-গত ১৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খুশনুর রাবাইয়াতের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০ একর সরকারি জমি ও ৩৫টি অবৈধ প্লট উদ্ধার করা হয়। কয়েকটি টিনশেড ঘরও ভেঙে দেওয়া হয়।

তবে অভিযানে ভণ্ড কবিরাজ মাসুকের দখলে থাকা জায়গাগুলো অক্ষত থাকে। স্থানীয়দের অভিযোগ—অভিযানের পর দখলবাজদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না হওয়ায় পরদিন থেকেই তারা পুনরায় দখল শুরু করে।

চা-বাগানের ব্যবস্থাপকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন-অভিযানকালে ইউএনও খুশনুর রাবাইয়াত বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে টিলা কাটা ও অবৈধ স্থাপনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা বাগানের ব্যবস্থাপককে ঘটনাস্থলে আসতে অনুরোধ করলেও তিনি আসেননি। তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বাগানের ব্যবস্থাপকও এই অবৈধ প্লট বিক্রির সঙ্গে জড়িত। সরকারি জমি রক্ষার দায়িত্বে থাকা বাগান কর্তৃপক্ষই এখন ভূমিখেকো চক্রের সহযোগী হয়ে উঠেছে।

জাল কাগজে প্লট বিক্রি, ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ-তদন্তে জানা যায়, খাদিমনগর চা-বাগানের (মৌজা-৭১) ১১১১ থেকে ১১১৮ দাগের প্রায় ১০ একর জমি জাল কাগজ তৈরি করে বিক্রি করা হয়েছে। চা-বাগানের ইজারা ভূমি আইন অনুযায়ী অন্য কোনো কাজে ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও এই চক্র সরকারি খাস জমি দখল করে ভুয়া দলিল তৈরি করে বিক্রির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরল-সাধারণ মানুষ এসব প্লট কিনে প্রতারিত হচ্ছেন, অথচ দখলবাজ চক্র প্রশাসনের ছত্রছায়ায় দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

টিলা কেটে পরিবেশ ধ্বংস-স্থানীয়দের অভিযোগ, চক্রটি টিলা কেটে মাটি বিক্রি করছে এবং বৃক্ষ নিধনের মাধ্যমে পরিবেশ ও প্রকৃতির মারাত্মক ক্ষতি করছে। খেলার মাঠ ও কুলি বস্তির জায়গাও তারা দখল করে নিচ্ছে। উপজাতি শ্রমিক পরিবারের কয়েকটি ঘরও জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে।

প্রতিবাদকারীদের হুমকি ও অপপ্রচার-দখলবাজদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে অভিযোগের পর থেকেই চক্রটি প্রতিবাদকারীদের হুমকি দিচ্ছে এবং মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন-সিলেট জেলা প্রশাসক মো. সরোওয়ার আলম সরকারি জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিলেও খাদিমনগর চা-বাগানের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

স্থানীয়দের প্রশ্ন—অভিযানে জমি উদ্ধারের পরও কেন দখলবাজদের বিরুদ্ধে মামলা হলো না? নাকি প্রশাসনের নীরবতার মধ্যেই একের পর এক দখল হয়ে যাবে খাদিমনগর চা-বাগানের সরকারি জমি?

খাদিমনগর চা-বাগানে সরকারি খাস জমি ও ইজারা ভূমি দখল, টিলা কাটা, জাল দলিল সৃজন ও অবৈধ প্লট বিক্রির ঘটনা সিলেটের জন্য উদ্বেগজনক।

আইনি পদক্ষেপ ছাড়া এই দখলবাজ চক্রের কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়—এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।

 

সূত্র- দৈনিক পর্যবেক্ষণ

 


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ