সিলেটের ‘চোর পপি’ চক্রের দৌরাত্ম্য ও খুঁটির জোর কোথায়?
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানজুড়ে সক্রিয় এক ভয়ংকর নারী অপরাধী— পপি ওরফে ‘চোর পপি’। দীর্ঘদিন ধরে সে গড়ে তুলেছে একটি বিশাল মহিলা চোর সিন্ডিকেট, যারা শহরের ব্যস্ততম শপিং মল, ক্লিনিক, হাসপাতাল এমনকি অভিজাত বাসাবাড়িতেও চুরির সঙ্গে জড়িত।
সূত্রে জানা যায়, পপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই সিন্ডিকেটের কার্যক্রম চলছে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়— বিশেষ করে জিন্দাবাজার, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ক্লিনিকপাড়া, ও উপশহরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটে চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা, আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই চক্রের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বলে অভিযোগ উঠেছে।পপি বেগম হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিণ্ডন্ডা গ্রামের আব্দুল আউয়ালের স্ত্রী ও নগরের উপশহর এলাকায় বাসিন্দা।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, পপির নামে অনেক গুলো মাদক, চুরি, ও ছিনতাই, মামলা রয়েছে। এ প্রতিবেদকের হাতে মামলার নথি ও হয়েছে, যা বিভিন্ন থানায় রুজু করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাকে গ্রেফতার করলেও কিছুদিনের মধ্যেই রহস্যজনক কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বদলি হয়ে যান।
অভিযোগ আছে, বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগ নেত্রীর পরিচয় ব্যবহার করে পপি প্রভাব বিস্তার করেছে। সেই সময় থেকেই তার দাপট ও অপকর্ম ব্যাপক আকার ধারণ করে। বর্তমানে সে সিলেটের উপশহরের এইচ ব্লকে নির্মিত নিজস্ব বিলাসবহুল বাড়িতে বসবাস করছে।
পুলিশ জানায়, পপির বিরুদ্ধে সিলেট বিভিন্ন এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগে মামলা রয়েছে। কখনো ছিনতাই, আবার কখনো মাদক বিক্রি করতে গিয়ে গ্রেফতার হন। বিভিন্ন সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠালেও জামিনে বেরিয়ে এসে ফের অপরাধে জড়ান তিনি। সিলেট ওসমানী হাসপাতাল কেন্দ্রিক রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা চুরির ঘটনায় এক নামেই লেডি চোর হিসেবে তাকে সবাই চেনে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কিছু সাংবাদিক পপির কাছ থেকে নিয়মিত ‘বখরা’ পান, যার কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
নগরবাসীর দাবি, সিলেট নগরীর নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে এবং এই নারী চোর সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।