সিলেটে চোরাকারবারের প্রতিবাদ করায় বসতঘরে হামলা
বিশেষ প্রতিবেদক:: সিলেটে চোরাকারবারের প্রতিবাদ করায় প্রতিবাদকারীর বসতঘরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর পঞ্চমখন্ড গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে ওলিউর রহমান (৩২)।সম্প্রতি (২১ অক্টোবর) সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম ও দ্রুত বিচার আদলতে এ অভিযোগ দায়ের করেন ওলিউর রহমান।
মামলায় আসামী করা হয় পাঁচজনকে। তারা হলেন, সুনামগঞ্জের ছাতক থানার জাহিদপুর গ্রামের রশিদুল্লাহর ছেলে বর্তমানে সিলেট মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার জালালাবাদ আবাসিক এলাকার ৯নং বাসার বাসিন্দা হোসেন মোহাম্মদ আলী (৩০), কোম্পানীগঞ্জ থানার তেলিখাল এলাকার আকবর আলীর ছেলে রুবেল আহমদ (৩০), জৈন্তাপুরের হরিপুর বাঘেরখাল গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে রায়হান আহমদ (২৭), একই ঠিকানার সালমান আহমদ (২৫) ও এয়ারপোর্ট থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের ধুপাগুল গ্রামের সমির আহমদ (৩২)।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তারা সবাই সন্ত্রাসী এবং চোরাকারবারী। তারা ওলিউর রহমানের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য, নিষিদ্ধ ওষুধ, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন। তিনি এর প্রতিবাদ করায় এবং অবৈধ পণ্য পরিবহনে বিভিন্ন সময়ে বাধা প্রদান করায় বাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিলে তিনি নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের সেনাক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
পরে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার বাড়িতে চড়াও হয়। এসময় তাদের হাতে দা, রামদা, লাঠিসোটাসহ অন্যান্য অস্ত্র ছিল। ওলি তখন আতঙ্কিত অবস্থায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে আত্মগোপন করতে বাধ্য হন। তারা তাকে না পেয়ে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে এবং যেখানে পাবে সেখানে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ব্যাপারে তিনি গোয়াইনঘাট থানায় ওই দিনই একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছিলেন। এতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয় এবং ১১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দা, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন সন্ত্রাসীকে নিয়ে আবারও ওলির বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি আত্মগোপন করলে হোসেন মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে অন্যান্য আসামীরা দরজা ও দেয়াল ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এতে তার লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। তারা যেখানে ওলিকে পাওয়া যাবে সেখানেই তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
পরে তিনি সন্ত্রস্ত গ্রামবাসীর পরামর্শে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে নানা টালবাহানায় গোয়াইনঘাট থানাপুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়।
তিনি জানান, হোসেন মোহাম্মদ আলী ও ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে এর আগে সুনামগঞ্জের ছাতক থানায় চোরাই পণ্য জব্দের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা রয়েছে (নং ৮২/৩০/৩/২০২৫ ও -৭/৪/৯/২০২৪)।
তিনি হোসেন মোহাম্মদ আলী ও তার সন্ত্রাসী চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে ওলিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্য সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছেন।