সিলেট নগরীর আম্বরখানায় যুক্তরাজ্য প্রবাসীর দোকান কোঠা আত্মসাতে ১ জন গ্রেফতার
সিলেট মহানগরীর আম্বরখানার সেন্ট্রাল প্লাজায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমীর আহমদ মানিক মিয়ার দোকান কোঠা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় এসএমপির কোতোয়ালী মডেল থানায় মানিক মিয়া বাদী হয়ে গত ৭ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৯/৪৪৩। ঘটনার অভিযোগে গত ১১ অক্টোবর শনিবার মামলার ২নং আসামী আলা উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
মামলায় নগরীর আম্বরখানাস্থ সেন্ট্রাল প্লাজার জমিদার মৃত আব্দুন নুরের ছেলে আব্দুল হাফিজ সুহেল, মৃত হারুন রশীদের ছেলে আলা উদ্দীনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী আমীর আহমদ মানিক মিয়া উল্লেখ করেন ১৯৯৩ সনের ১৪ ্্এপ্রিল ১নং বিবাদী আব্দুল হাফিজ সোহেল এর চাচা সেন্ট্রাল প্লাজার সত্ত্বাধিকারী (মরহুম) আনিছ মিয়া পিতা-মৃত আব্দুল মুতলিব, সাকিন সি/১ সেন্ট্রাল প্লাজা, আম্বরখানা, সিলেটের নিকট থেকে ১নং ও ২নং বিবাদীর স্বাক্ষীর মাধ্যমে ২ লাখ টাকা নগদ গ্রহণ করে নগরীর আম্বরখানাস্থ সেন্ট্রাল প্লাজার ১ম সারির ১নং দোকানকোঠা (১০ ফুট ১০ ফুট), স্থায়ী ভাড়া বন্দোবস্তের অঙ্গিকারনামা সম্পাদন করা হয়।
আনিছ মিয়ার নিকট হতে দোকান কোঠাটির দখল সমজিয়া নিয়ে বাদীর ছেলের নামে (আজিজ এন্টারপ্রাইজ) দোকান কোঠাতে ব্যবসা শুরু হয়। বাদী প্রবাসী হওয়ায় তার ছোট বোনের স্বামী ২নং বিবাদীকে দোকান কোঠা দেখাশুনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও ভাড়া আদায়ের মৌখিক দায়িত্ব প্রদান করেন।
পরবর্তীতে বর্ণিত দোকানকোঠা সহ অপরাপর দোকান কোঠা ভেঙ্গে বহুতল বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণে টাকার প্রয়োজন হওয়ায় বিগত ১৮/০৭/১৯৯৪ ইংরেজি সনে আনিছ মিয়া প্রবাসী মানিক মিয়ার কাছ থেকে ২নং বিবাদী ও ১নং বিবাদীর আপন ভাই আব্দুল আলীম জুয়েল সহ অন্যান্য সাক্ষীগণের স্বাক্ষীক্রমে সাড়ে ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে আরো একখানা স্মরণলিপি মানিক মিয়ার নামে সম্পাদন করেন এবং স্মরণলিপিতে প্রতিজ্ঞা করেন ১ (এক) বছরের মধ্যে সাড়ে ৫ লাখ টাকা ফেরত দিতে না পারলে বর্ণিত স্থায়ী ভাড়া বন্দোবস্তাকৃত দোকান কোঠাটি ভিটাসহ সাফ কবালা রেজিস্ট্রারী করে দিবেন।
দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ায় বিগত ১৮/০৮/২০০২ ইংরেজি সনে আরো একখানা অঙ্গিকারনামার মাধ্যমে ১ (এক) বছরের মধ্যে উপরোল্লেখিত টাকা ফেরত দিতে না পারলে বর্ণিত স্থায়ী ভাড়া বন্দোবস্তাকৃত দোকান কোঠাটি ভিটাসহ সাফ কবালা রেজিস্ট্রারী করে দিবেন এতে তার কোন উত্তরাধিকারীর ওজর আপত্তি থাকবে না। উল্লেখ্য যে, সিলেট নগরীর আম্বরখানাস্থ সেন্ট্রাল প্লাজার সত্ত্বাধিকারী আনিছ মিয়া অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে ১নং বিবাদী আব্দুল হাফিজ সুহেল উত্তরাধিকার হোন।
সেই সুবাদে ২নং বিবাদী আলাউদ্দিন বর্ণিত দোকান কোঠার জমিদার ১নং বিবাদী আব্দুল হাফিজ সুহেল এর নিকট হতে ২নং বিবাদী আলাউদ্দিন বাদীর অজান্তে জমিদারি ভাড়া আদায়ের রসিদে বাদী মানিক মিয়ার নামের বদলে আলাউদ্দিন নামে ভাড়া আদায়ের রসিদ গ্রহণ করে।
এছাড়াও বাদীর বসত বাড়ি দেখাশুনা করার জন্য বোন সহ ২নং বিবাদীকে বসত বাড়িতে রাখেন। বসতবাড়ি সহ কিছু জায়গা জমিনের খাজনা পরিশোধের লক্ষ্যে দলিলাদি এবং বর্ণিত দোকান কোঠার চুক্তিপত্র ২নং বিবাদীর নিকট জমা রাখা হয়।
২নং বিবাদীর আচরণে বাদীর সন্দেহ হলে বাদী প্রবাসী মানিক মিয়া ২নং বিবাদী আলাউদ্দিনকে তার দোকান কোঠার সমুদয় চুক্তিপত্র ও অঙ্গিকারনামা ও একরার নামার আসল কপি এবং অপরাপর সম্পত্তির কাগজাত তাকে ফেরত দেয়ার কথা বললে আলাউদ্দিন বাদীর বোনকে সাথে নিয়ে বাদীর কিছু জায়গা জমির কাগজপত্র ও বর্ণিত দোকান কোঠার সমুদয় চুক্তিপত্র ও অঙ্গিকারনামা ও একরার নামার আসল কপি সঙ্গে নিয়ে গত ২১/০৩/২০০৯ ইং তারিখে সকাল অনুমান ১০টা সময় বাদীর বাড়ি হতে চলে যান।
এই অবস্থায় বাদী মানিক মিয়া নিরুপায় হয়ে সকল কাগজপত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে ২নং বিবাদী আলাউদ্দিনকে আসামী করে ২০০৯ সালের ৪ জুন দক্ষিণ সুরমা থানায় ১৭৩নং সাধারণ ডায়ের করেন। এরপরও বিবাদী আলাউদ্দিনের নিকট থেকে দোকান কোঠা ও অন্যান্য ভূমির আসল দলিলাদি উদ্ধার করতে পারেননি।
১নং বিবাদী আব্দুল হাফিজ সুহেল ও ২নং বিবাদী আলাউদ্দিন একে অন্যের বন্ধু হওয়ার সুবাদে ১নং বিবাদীর প্ররোচনা ও সহযোগিতায় জালজালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন কাগজাত সৃজন করে ২নং বিবাদী বর্ণিত দোকান কোঠা আত্মাসাতের চেষ্টায় লিপ্তি রয়েছে। এই অবস্থায় বাদী মানিক মিয়া বিগত ২৫/০৭/২০২৫ইং তারিখে দুপুর অনুমান সাড়ে ১২টায় বর্ণিত দোকান কোঠায় গিয়ে উপরোক্ত বিবাদীদ্বয়কে দোকান কোঠা সমজিয়ে দেয়ার কথা বললে বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বাদী ও তার পরিবারের লোকজনদের প্রাণ নাশের হুমকী প্রদান করেন।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করে মানিক মিয়া ব্যর্থ হয়েছেন। তাই ন্যায় বিচারের আশায় কোতোয়ালী মডেল থানায় তিনি মামলা দায়ের করেন।