শিরোনাম
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি খোলা চিঠি* শারদীয় দূর্গা পূজায় শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় করেন -সাবেক সাংসদ জননেতা ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত।  থানায় দেখতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন ২ শ্রমিক  ২০২৬ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার, কমানো হয়েছে বিমান ভাড়া সুনামগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে শতাধিক হিন্দু মুসলিম নারীর মাঝে বস্ত্র বিতরন অনুষ্ঠানে ধানের শীষের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এড.নুরুল ইসলাম আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ অনুরাগী জাগ্রত যুব সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটি, শ্রী অদ্বৈত ভূমি সুনামগঞ্জের আয়োজনে শতাধিক নারী-পূরুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ জৈন্তাপুরে সিলেট জেলা তাতী দলের সদস্য সচিব আলতাফ হোসেন বিলাল সহ নবগঠিত কমিটির সদস্যরা সংবর্ধিত ছাতকে পুলিশের এক অভিযানে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার ৪  মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সাংসদ- ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্তর নির্বাচনী প্রচারণা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ছাত্রদলের সাথে মতবিনিময় সভা।  মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সাংসদ- ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্তর নির্বাচনী প্রচারণা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ছাত্রদলের সাথে মতবিনিময় সভা।
বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৩ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি খোলা চিঠি*

স্টাফ রিপোর্টার / ৩৮ Time View
Update : বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫

*আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি খোলা চিঠি*

 

সেলিম মাহবুবঃ বাংলাদেশ আজ এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। স্বাধীনতার অর্ধশতক পরও আমরা জাতি হিসেবে নতুন স্বপ্ন, নতুন আশা এবং নতুন শৃঙ্খলার পথে অগ্রসর হচ্ছি। তবে এই যাত্রাপথ সহজ নয়। জাতির ঘাড়ে চেপে বসা দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র, হত্যাযজ্ঞ ও একচেটিয়া দমননীতি আমাদের বারবার ব্যথিত করেছে। এমন এক সময়ে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস। জনগণের হৃদয়ে তিনি এক আশার প্রতীক। আমজনতার দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ বিল্লাহ বলেন। 

কিন্তু সাম্প্রতিক মন্তব্যে—যেখানে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ নয় বরং সাময়িকভাবে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং যেকোনো সময় তা প্রত্যাহার করা সম্ভব—সেই বক্তব্যে দেশের জনগণের অন্তরে রক্তক্ষরণ ঘটেছে। কারণ, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য মানুষের প্রাণ বিসর্জনের বিনিময়ে আজকের এই পরিবর্তন এসেছে। যে চেয়ারে আপনি বসেছেন, সেই চেয়ার এখনো রক্তে ভেজা। সেই রক্তের সাথে বেইমানি করা মানে শহীদের আত্মত্যাগকে উপহাস করা, গণমানুষের সংগ্রামকে অসম্মান করা।

অতএব, আপনার প্রতি বিনীত অনুরোধ—আপনি আপনার উক্তি প্রত্যাহার করুন। আওয়ামী লীগের বিচারহীন অতীত অপরাধসমূহকে ধামাচাপা দেওয়ার মতো বক্তব্য জাতিকে হতাশ করবে। জনগণ আজ স্পষ্ট বিচার চায়।

প্রথমত, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের রক্তের ঋণ শোধ করতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের বিচারের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে কার্যকর করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের সময় সরকারের দমননীতির কারণে অসংখ্য পরিবার তাদের প্রিয়জন হারিয়েছে। সেই হত্যার বিচার ছাড়া জাতির আত্মা শান্তি পাবে না।

দ্বিতীয়ত, হেফাজতে ইসলামের হত্যাকাণ্ড—যেখানে নিরীহ আলেম-ওলামা, ছাত্র ও সাধারণ মুসল্লিদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে—তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এ হত্যাযজ্ঞের দায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নেতৃত্বের উপর বর্তায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার ছাড়া শহীদদের আত্মা কখনো শান্ত হবে না।

তৃতীয়ত, পিলখানা হত্যাযজ্ঞ, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়, তার বিচার এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। এ ঘটনার প্রকৃত পরিকল্পনাকারী ও সুবিধাভোগী রাজনৈতিক নেতৃত্বের মুখোশ উন্মোচন অপরিহার্য। জনগণ বিশ্বাস করে আওয়ামীলীগের তৎকালীন শীর্ষ নেতৃত্ব, বিশেষত শেখ হাসিনা, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম সহ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।

মাননীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান, আপনার হাতে আজ এক বিরল সুযোগ এসেছে। আপনি চাইলে এমন এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন যা শুধু বাংলাদেশের মাটিতেই নয়, সমগ্র বিশ্বের বুকে আপনাকে শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। যদি আপনি আওয়ামী লীগের নৃশংস অপরাধের বিচার নিশ্চিত করেন, শহীদ পরিবারকে ন্যায় দেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করেন—তাহলে জাতি আপনাকে চিরকাল স্মরণ করবে।

আজ প্রয়োজন শহীদ পরিবারের আর্তনাদ শোনা, অঙ্গহানি হওয়া যোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে মূল্যায়ন করা। প্রয়োজন গণঅভ্যুত্থানের সেই তরুণদের রক্তকে সম্মান জানানো, যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। দল

একই সাথে আমাদের ইতিহাসের অন্য মাইলফলকগুলোতেও দৃষ্টি দিতে হবে। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিকরা জীবন দিয়ে আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা বজায় রাখতে হবে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটি স্তরে।

এছাড়াও, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মহানায়করা যে আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন, সেই স্মৃতি ও চেতনাকে ধারণ করেই দেশ পরিচালনা করতে হবে। তাঁদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে আবার কোনো স্বৈরতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র কিংবা দুর্নীতিবাজ দলের কাছে বিকিয়ে দেওয়া চলবে না।

আপনার প্রতি আজ জাতির আহ্বান—বিচারহীনতার সংস্কৃতি চিরতরে শেষ করুন। আওয়ামীলীগের অপরাধ সমূহকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার করে জাতিকে একটি নতুন দিগন্ত উপহার দিন। তবেই বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, প্রমাণ করবে যে এই জাতি অন্যায়ের সাথে আপস করে না।

ইতিহাস সাক্ষী থাকবে, ড. মুহাম্মদ ইউনুস জনগণের রক্তের ঋণ শোধ করেছেন, ন্যায়বিচারের পতাকা উড়িয়েছেন, এবং এক নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করেছেন।

 


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ