শিরোনাম
ছাতকে পুলিশের এক অভিযানে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার ৪  মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সাংসদ- ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্তর নির্বাচনী প্রচারণা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ছাত্রদলের সাথে মতবিনিময় সভা।  মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সাংসদ- ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্তর নির্বাচনী প্রচারণা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ছাত্রদলের সাথে মতবিনিময় সভা। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের দাবীতে বিশাল মিশিল, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ ছাতকের খুরমায় যৌথবাহিনীর অভিযানে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার  হরিরামপুরে জাতীয় পার্টি সহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে -জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। গোয়াইনঘাটের ডালারপাড় নদীর বালুবাহী নৌকা থেকে ফারুক মেম্বারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ! ফের গোয়াইনঘাটে বালু লুটের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নেপথ্যে প্রভাবশালী মহল ৫ দফা দাবীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলা শাখার বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ সিলেট জেলা তাঁতীদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ ও কামরুলকে ফুলেল শুভেচ্ছা
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন

সিলেটে জমজমাট মামলা বাণিজ্য এক ভিকটিম, দুই মামলা

স্টাফ রিপোর্টার / ৪৬ Time View
Update : শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিশেষ প্রতিবেদক:

সিলেটে জমে উঠেছে মামলা বাণিজ্য। দিশেহারা সাধারণ মানুষ প্রতিদিন পড়ছেন হয়রানির শিকার। মামলার আড়ালে চলছে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি। এ চক্রে জড়িত রয়েছেন বিএনপি-জামায়াত ঘরানার কিছু আইনজীবী, মুহাররির, দালাল এবং নামধারী সাংবাদিক। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর শুরু হওয়া এ মামলা বাণিজ্য এখনো অব্যাহত রয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময়কার হামলা ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলার বন্যা বয়ে যায়। পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, সরকারি কর্মকর্তা এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধেও একের পর এক মামলা দায়ের করা হয়। জামিন অযোগ্য বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের মামলাগুলো ঘিরেই শুরু হয় ‘আসামি বাণিজ্য’, ‘এফিডেভিট বাণিজ্য’, ‘প্রত্যাহার বাণিজ্য’ ও ‘এসাইলাম বাণিজ্য’।

সূত্র মতে, প্রতিটি মামলায় দেড় থেকে দুইশ’ আসামি করা হয়। এরপর প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করা হয়। আবার কোনো সময় আসামিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এমনকি প্রবাসীদের নামও ইচ্ছাকৃতভাবে আসামির তালিকায় ঢুকিয়ে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের (Asylum) নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে। গত ১৪ মাসে এভাবে মামলার আড়ালে শত কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আলোচনায় আশরাফুর রহমান তুতি-

সম্প্রতি মামলা বাণিজ্যের ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন দক্ষিণ সুরমার হরগৌরী গ্রামের ময়না মিয়ার ছেলে আশরাফুর রহমান তুতি (৪৫)। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর– ৯১১৩১৬০৩৮৭৬৭৮। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একই ভিকটিমকে ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে একাধিক মামলা দায়ের করেছেন।

২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের আহত সিকিউরিটি গার্ড সুলতান আহমদকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে নিজে বাদী হয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন আমলী-১ আদালতে সিআর ১১১২/২০২৪ মামলা করেন। মামলাটি ফাইল করেন এডভোকেট জুশলি নিগার চৌধুরী।

পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ২৪ আগস্ট একই ভিকটিম সুলতান আহমদকে বাদী বানিয়ে একই ঘটনায় আবারও সিআর ২৫২/২০২৫ মামলা দায়ের করেন। এবার মামলাটি ফাইল করেন এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম (আইডি নং–২২৯)। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই সিলেটকে নির্দেশ দেন।

একই ঘটনায় একই ভিকটিম দিয়ে দুটি মামলা দায়ের হওয়ায় আদালতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। যদিও আশরাফুর রহমান তুতি পরে মামলাগুলোর একটি প্রত্যাহার করান, তবে তার আগেই প্রত্যাহারের নামে আসামিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ফেঞ্চুগঞ্জের ব্যবসায়ী ময়নুল ইসলাম জানান, তাকে প্রথমে এক মামলায় আসামি করে পরবর্তীতে টাকা নিয়ে নাম প্রত্যাহার করা হয়। আরেক মামলায় তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া আরও একটি মামলায় তার নাম প্রত্যাহারের জন্য ২০ হাজার টাকা নেন তুতি।

শুধু ময়নুল ইসলামই নন, এরকম হাজারো আসামির কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সুলতান আহমদ বলেন, আশরাফুর রহমানসহ কয়েকজন সরকারি অনুদানের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে দিয়ে মামলা করিয়েছেন। একটি মামলা প্রত্যাহার হলেও অন্য মামলাটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।

আইন বাণিজ্যের এ চক্রে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, আর আদালতের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। মামলাকে হাতিয়ার বানিয়ে চাঁদাবাজির এই প্রক্রিয়া সিলেটের বিচারাঙ্গনে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ