স্টাফ রিপোর্টার:
গোয়াইনঘাটে বালু খেকোদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ পাঁছ দপ্তরে ১২ জনের নামে অভিযোগ অজ্ঞাত আরও ৬০–৭০
গোয়াইনঘাট (সিলেট) — উপজেলার ১২ নং সদর ইউনিয়নের লাটি (দক্ষিণ) পশ্চিমপাড় জামে মসজিদের সভাপতি রহিম উদ্দিন জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি), গোয়াইনঘাটের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে তিনি নাম উল্লেখ করে সাক্ষাত ১২ জনকে এবং অজ্ঞাত আরও ৬০–৭০ জনকে মিলে মসজিদের জমি দখল, জবরদস্তি, চাঁদা দাবি ও সহিংস আচরণে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ এনেছেন।
রহিম উদ্দিনের অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, ঘটনার কেন্দ্রস্থল ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরের লাটি (দক্ষিণ) মহল্লায়—বর্ণিত খতিয়ান নং ০১, বর্তমান দাগ নং ২৫৬ (আয়তন: ২৫ শতক) যেখানে পূর্বে মসজিদসহ বসতভূমি ছিল। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রায় ৬০–৭০ বছর পূর্বে ওই স্থানে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল; তবে ১৯৮৮ সালের পাহাড়ি ঢলে মসজিদ ও আশপাশের বাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার পর পরে মসজিদসহ ওই ভূমি পুনরায় ব্যবহার করে আসছেন বাদী ও তাঁর আত্মীয়-স্বজনরা।
অভিযোগ অনুযায়ী ২০২৩ সাল থেকে বিবাদীদের নেতৃত্বে ড্রেজার ও লিস্টার মেশিন, স্টীলের নৌকা, ট্রাক্টর-ট্রলি ব্যবহার করে ধারাবাহিকভাবে বালু উত্তোলন চলছে। বিশেষ করে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাত্রে সাহিত্যে উল্লেখিত তোতা মিয়া ও অজ্ঞাতনামা গ্রুপ একযোগে স্টীলের নৌকা নিয়ে মসজিদ, আশপাশের ভূমিতে ঢুকে ড্রেজার স্থাপন করে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করে এবং বাদীর বিরুদ্ধে ২০,০০,০০০ (বিশ লাখ) টাকা চাঁদা দাবি করে বাধ্য করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বাদী ও এলাকার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা ধারালো দা, রড, বাঁশের লাঠিসহ অস্ত্র হাতে আক্রমন করে ।
একই সময়ে ১০–১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে অনুমান ১৮ লক্ষ টাকার বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়া এবং মোট মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতির শঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় প্রাণের হুমকির মধ্যে আছে এলাকা বাসী। বাদীর ভাষ্য, বিচ্ছিন্ন সময়ে এবং বর্ষা-পাহাড়ি ঢলের সম্ভাব্য সময় কোনো বড় দূর্ঘটনায় সম্পূর্ণ বসতবাড়ি ও আশপাশের জমি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
রহিম উদ্দিন অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, বিবাদীরা বাদী, তাঁর মহল ও অন্যান্য জমি-দখলীদের নজরদারি করে অশ্লীল ভাষায় হুমকি দেয়, নারীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে পেছাণোর ভয়-বীতি দেখায় এবং স্থানীয় যেকোনো আলোচনায় বাধা প্রদান করে।
অভিযোগে নাম উল্লেখ করে যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে লাটির শাহজাহান, জাহানারা বেগম, অহিদা বেগম, তোতা মিয়া, আব্দুল করিম, আব্দুস শুকুর, আব্দুল মালিক, বশির উদ্দিন, বশর উদ্দিন, খুকু মনি, মুন্না মিয়া, নিলুফা বেগম রয়েছেন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৬০–৭০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
রহিম উদ্দিন জেলা ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত তদন্ত, জমি সম্পর্কিত কাগজপত্র যাচাই ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তিনি জানান, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করলেও সমস্যার স্থায়ী ও নিরাপদ সমাধান না হওয়ায় উচ্চ কর্তৃপক্ষের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।