গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ এলাকায় একটি পারিবারিক কবরস্থান জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। আজ (২ জুলাই) দুপুর ১২টায় ওই কবরস্থানের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে রমজান আলী রনজু (৫৬) বলেন, “আমার পূর্বপুরুষদের সমাধিস্থ করা কবরস্থানের জায়গাটি যেন ফেরত দেওয়া হয়, এটাই আমাদের একমাত্র দাবি। কবরস্থান নিয়ে যে এই ধরনের দখল চেষ্টার মতো ঘটনা ঘটবে, তা কল্পনাও করিনি।”
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সারদাগঞ্জ পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. রমজান আলীর বাবা মো. হাছেন আলী ১৯৫৮ সালে সাফ কাওলা রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে গোবিন্দবাড়ী মৌজার ৩৪ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ৩৩ শতাংশ জমি বিক্রয় করলেও বাকি ১ শতাংশ জমি পরিবারের সম্মতিক্রমে পারিবারিক কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। সেখানে রমজান আলীর মা, নানা-নানি, খালা এবং বিবাদী নূর মোহাম্মদের দাদা-দাদির কবর রয়েছে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পাশের গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান রিচ কটন অ্যাপারেলস লিমিটেড-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি—নূর মোহাম্মদ মিয়া ওরফে নূরু, মো. রেজাউল করিম (ডিজিএম), মামুন রেজা জ্যাকি (এমডি) সহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন—গত ১ জুলাই দুপুরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কবরস্থানে প্রবেশ করে কবর ভাঙার চেষ্টা চালায় এবং সেখানে জবরদখলের উদ্দেশ্যে ইট দিয়ে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ শুরু করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রমজান আলী বাধা দিলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
রমজান আলী কাশিমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ছাড়াও পূর্বে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারায় গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মোকদ্দমা (নং-১০৮০/২০২৪) দায়ের করেন, যা এখনো বিচারাধীন রয়েছে। আদালত ওই মামলায় উভয়পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দিলেও অভিযুক্তরা তা অমান্য করেছেন বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এটি দীর্ঘদিনের পারিবারিক কবরস্থান। সেখানে এ ধরনের অনধিকার প্রবেশ ও কবর ভাঙার চেষ্টা অমানবিক এবং অত্যন্ত নিন্দনীয়। তারা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, “এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ধরনের ঘটনা শুধু জমি দখলের নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করারও শামিল। কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষা করা সবার নৈতিক দায়িত্ব—এমনটি মনে করেন সচেতন মহল।