রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
উচ্চতায় ৬ ফুট, লম্বায় সাড়ে ৭ ফুট, আর ওজন ২৫ মণ। বিশাল দেহের এ ষাঁড় গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘রাজাবাবু‘।
রাজাবাবুকে একনজর দেখার জন্য প্রতিদিন শত মানুষ ভিড় করছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের ঘুঘুশাইল গ্রামের কৃষক মো. কামরুল খানের বাড়িতে। গত দুই বছর ধরে রাজাবাবুকে লালন-পালন করছেন কামরুল খান ও তার স্ত্রী জলি বেগম। এখন গরুটিকে কোরবানির হাটে তোলার অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তারা।
কামরুল খান জানান, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে পাশের হাটবাড়িয়া গ্রামের কৃষক শহীদ দেওয়ানের কাছ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরুটিকে কিনে আনেন তিনি। আদর করে গরুটির নাম রাখেন `রাজাবাবু‘। বর্তমানে রাজাবাবুর বয়স সাড়ে ৩ বছর। খাদ্য হিসেবে রাজাবাবুকে খাওয়ানো হয় ভুট্টা, ছোলা, খেসারি, গমের ভূষি, জব, খড় ও তাজা ঘাসসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে ২৫ মণ ওজনের এ ষাঁড়ের জন্য প্রতিদিনের বাজেট দেড় হাজার টাকা।
কামরুল খান কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজাবাবুর দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা। রাজবাড়ী জেলার মধ্যে রাজাবাবুই আকার, আকৃতি ও ওজনের দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি তার।
তিনি বলেন, রাজাবাবুকে খুব বেশি একটা ঘর থেকে বের করা হতো না। তবে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বর্তমানে রাজাবাবুকে ঘর থেকে বের করা হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই নিজ এলাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে রাজাবাবুকে একনজর দেখার জন্য শত মানুষ ভিড় করছেন।
কামরুল খানের স্ত্রী জলি বেগম বলেন, রাজাবাবুকে আমি নিজের সন্তানের মতো যত্ন করে লালন-পালন করেছি। ওকে দিনে তিনবার গোসল করাতে হয়। গোয়াল ঘরটিও তিন বেলা পরিস্কার করতে হয়। সারাদিনই যত্নের মধ্যে রাখতে হয় গরুটিকে। বিক্রির কথা বলার পর থেকে রাজাবাবু খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। মাঝ্যে মধ্যে কান্নাও করছে, যেটা তার চোখ দিয়ে পানি ঝড়া দেখে আমি বুঝতে পারি। আমারও বুকটা ফেটে যায়, কষ্ট লাগে। কিন্তু কি করবো, সাংসারিক দায়বদ্ধতার কারণে ওকে বিক্রি করতেই হবে।
প্রতিবেশী সিরাজ ফকির বলেন, আমাদের এলাকায় রাজাবাবুর মতো এত বড় গরু আগে কখনো দেখিনি। কামরুল ভাই ও তার স্ত্রী অনেক কষ্ট ও যত্ন করে গরুটিকে লালনপালন করে বড় করেছেন। আমরাও চাই তারা যেন ন্যায্য দামে গরুটিকে বিক্রি করতে পারেন।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. উমর ফারুক বলেন, প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে কামরুল খান তার গরুটিকে বড় করেছেন। আশাকরছি তিনি গরুটির আশানরুপ দাম পাবেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জেলায় ৫৫ হাজার ৭৫০ টি গবাদি পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত আছে ৮৯ হাজার ৫৬৬ টি পশু। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ৩৩ হাজার ৮১৬ টি পশু বেশি রয়েছে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৩০ হাজার ১১৭ টি, মহিষ রয়েছে ২৩২টি, ছাগল রয়েছে ৫৮ হাজার ৭৪০ টি ও ভেড়া রয়েছে ৪৭৩ টি, এছাড়া অন্যান্য পশু রয়েছে ৪ টি।
জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত গবাদি পশুগুলো খামারিরা অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করবেন বলে জানা গেছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ নিজাম উদ্দিন, নির্বাহী সম্পাদক : আইয়ুব আলী অফিস ; খান কমপ্লেক্স, সোনারপাড়া, শিবগঞ্জ, সিলেট। যোগাযোগ : প্রকাশক ও সম্পাদক : ০১৭৩৭-৩০৪৭৫১। ই-মেইল : sylhetbuletin@gmail.com
All rights reserved © 2025 sylhet buletin