নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাফলংয়ে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে অবৈধ পাথর উত্তোলন হুমকির মূখে জাফলং বাজার,স্কুল কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা,ফসলী জমি ও বাড়ি ঘর সহ পাথর কোয়ারিসমূহকে বিলুপ্ত ঘোষণাপূর্বক স্থায়ীভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
রবিবার (২৪ মার্চ) ৮টি মন্ত্রণালয়, ৩টি অধিদপ্তরসহ ১৬ জন সরকারি কর্মকর্তাকে এই নোটিশ পাঠানো হয়।রবিবার বেলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না তাদের নোটিশ অব ডিমান্ড ফর জাস্টিস পাঠান।
নোটিশে স্থায়ীভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, ইতোমধ্যে পাথর উত্তোলনে আহত ও নিহত শ্রমিকের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুতপূর্বক যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও সিলেটের সব নদীর ঐতিহাসিক ঐতিহ্য বজায় রেখে নদীকেন্দ্রীক টেকসই পর্যটন গড়ার রুপরেখা প্রণয়ন ও তা অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
নোটিসে আরও জানানো হয়, তবে উল্লেখিত পর্যটন এলাকাসমূহ থেকে যান্ত্রিকভাবে বোমা মেশিনের মাধ্যমে নির্বিচারে পাথর উত্তোলনের ফলে সিলেটের উল্লিখিত এলাকাসমূহ সৌন্দর্য হারিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। অনিয়ন্ত্রিত ও পরিবেশ বিধ্বংসী পাথর উত্তোলনের ফলে সমগ্র নদী ব্যবস্থা, বন, কৃষিজমি ও আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পিয়াইন ও ডাউকী তীরবর্তী সংগ্রামপুঞ্জি ও লামাপুঞ্জির অংশবিশেষ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
নোটিশে জানানো হয়, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট বিভাগ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ যা সমগ্র দেশের পর্যটকদের একটি আকর্ষণীয় স্থান। সিলেটের জাফলং নামে খ্যাত পিয়াইন ও ডাউকী নদীসহ ধলাই, বিছানাকান্দি, উৎমাছড়া, লোভাছড়া ও ভোলাগঞ্জ পাথরের ওপর প্রবাহিত স্ফটিক পানির জন্য অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান যা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত পর্যটনস্থল।
নোটিশে বেলা জানায়, ‘জেলায় বিলুপ্তির পথে এখানকার অতি মূল্যবান সুপারি বাগান। ধ্বংসের পথে ঐতিহ্যবাহী জাফলং চা বাগান। পরিবেশগত ক্ষতি ছাড়াও পাথর উত্তোলনকালে বিগত সময়ে প্রাণ হারিয়েছে ১০৯ জন শ্রমিক।’
নোটিশে আরও জানানো হয়, ‘ উত্তোলিত পাথর পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক চলাচলের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ এবং কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এ এলাকায় আনুমানিক ১৫০০ পাথরবাহী ট্রাক প্রতিদিন চলাচল করে থাকে। শুধু ২০২০-২০২১ সাল পর্যন্ত পাথরবাহী যানবাহন কর্তৃক সৃষ্ট ২৮টি দুর্ঘটনায় ৩২ জন প্রাণ হারায়।
আগামী ৭ দিনের মধ্যে নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে বেলাকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং একইসঙ্গে এর অন্যথায় আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।