বিশেষ প্রতিবেদক:
সিলেট জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরাণকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। দলের শীর্ষ মহল ব্যাপক অনুসন্ধান করেছে শাহপরাণের বিষয়ে। তাদের অনুসন্ধানে সীমান্তের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাকে।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকা থেকে পাথর ও বালু অবৈধভাবে উত্তোলনের সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অক্টোবর মাসে জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাপরানের পদ স্থগিত করেছে দল। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তার পদ স্থগিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- রফিকুল ইসলাম শাহ পরাণের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ পাথর ও বালু অবৈধভাবে উত্তোলনের সুষ্পষ্ট অভিযোগ থাকায় দলীয় শৃঙ্খলা এবং নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকান্ডে জন্য তার সকল দলীয় পদ স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
জানা গেছে, বালু-পাথর আহরণে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি হওয়ায় প্রকৃতি সুরক্ষায় গোয়াইনঘাটের ডাউকি-জাফলংকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করার পর ডাউকি-পিয়ান নদীর মোহনায় জমেছিল কয়েক স্তরে হাজার হাজার ঘনফুট পাথর। বছর বছর পরিমাপ করে রাখা এসব পাথর ৫ আগস্টের পর নতুন করে লুটের মুখে পড়ে। এক রাতের লুটপাটে এক কোটি ঘটফুট পাথর চুরি হয়ে গেছে বলে সরকারি হিসেবে উঠে আসে। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী লুট করা পাথরের মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান- সর্বশেষ গত ২৬ জুলাই পরিমাপ অনুযায়ী জাফলংয়ে পাথর মজুত ছিল ৩ কোটি ৭৪ লাখ ঘনফুট। ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে সেখানে ব্যাপক লুটপাটে প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর উধাও হয়ে যায়। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় সেখানে সেনা সদস্যরাও যেতে পারেননি। এই পাথর লুটের পর এর সঙ্গে আরও কয়েকজনসহ জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাপরাণ সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ উঠে। পরে বিএনপি খোঁজ নিয়ে এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শাহপরানের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপির একটি সূত্র।
একটি আই ফোনের বিনিময়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়া শাহপরাণের বিষয়ে ওই ঘটনার পর নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে শাহপরানের নানান অপকর্মের চিত্র।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেছেন, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে যে কোনো স্তরের নেতা অপকর্মে জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।