অপরাধ প্রতিবেদক:
সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের হাতিরখাল গ্রামের দিনমজুর মোশাহিদ আলীর ছেলে কালা মিয়া ওরফে শ্যাম কালা। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। জন্মসূত্রে দারিদ্রতার কশাঘাতে বেড়ে ওঠা কালা মিয়া ওরফে শ্যামকালা এখনও কলকাঠি নাড়েন সর্বত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই কালার হাত ধরে গোয়াইনঘাট সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকেছে শত-শত অবৈধ অস্ত্র। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলংয়ের সোনারহাঁট সীমান্তকে চোরাচালানের চারণভূমিতে
পরিণত করেছে কালা মিয়া সিন্ডিকেট। ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পটপরিবর্তন হলে শ্যামকালা যুবলীগ নেতা পরিচয়
বাদ দিয়ে নিজে বিএনপির যুবদলের নেতা হওয়ার জন্য দৌড় ঝাঁপ শুরু করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় একটি দুষ্টচক্রের সাথে ১০ লাখ টাকার একটি চুক্তি করেছে। যাতে তাকে উপজেলা যুবদলের কোন একটি পদ পাইয়ে দেওয়া হয়।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে,শ্যামকালা এলাকায় ব্যাপরোয়া প্রকৃতির লোক। তার
অবৈধ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ কেউ করলেই লোকজনের উপর অত্যাচার শুরু করে সে ও তার লাঠিয়াল বাহিনী।
জেলা ডিবির লাইনম্যান শামকালার শেল্টার দাতা কে ?
এলাকার অনেকেই অভিযোগ করে বলেন যে যারাই কালা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে এই চক্র। কখনো ডিবি পুলিশ দিয়ে নতুবা মিথ্যা মামলা দিয়ে নতুবা তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, উপজেলার কুখ্যাত চোরাকারবারি কালা মিয়া ওরফে শ্যাম কালার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায় স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সহ একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সাথে তার খুব অন্তরঙ্গ ছবি। তার ফেসবুক প্রোফাইলের টাইমলাইনে এখনও এরির্পোট লেখা পর্যন্ত ঝুলছে।
সচেতন মহলের প্রশ্ন হচ্ছে, একজন চিহ্নিত চোরাকারবারির সাথে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ছবি কিসের ইঙ্গিত বহন করে! সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, এই শ্যামকালা ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা- মামলার একজন এজাহার ভূক্ত আসামী। এখন সে মামলার বাদীকে চাপ দিচ্ছে উক্ত মামলা থেকে তাকে বাদ দিতে। নতুবা সে তাকে নানা প্রকার হয়রানি করবে।
এদিকে, সম্প্রতি বিএনপির জেলা -মহানগর ও কেন্দ্রের নির্দেশে এ পর্যন্ত ভারতীয় চিনি কান্ডের ঘটনায় বেশ কয়েক জনকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। অনেকের প্রশ্ন !তাহলে এই কুখ্যাত চোরাকারবারী শ্যামকালাকে যুবদলের সদস্য কিংবা পদ পাইয়ে দিতে কারা ইজারা নিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। যদিও ইতোমধ্যে উপজেলা দুই প্রভাবশালী নেতাকে আগেই দল থেকে বহিস্কার করে নিয়েছে জেলা বিএনপি ।
বারকী শ্রমিক কালা মিয়া এখন সিলেটের শীর্ষ চোরাকারবারী!
পশ্চিম জাফলং একটি সীমান্তবর্তী এলাকার চোরাচালান এখন তার নিয়ন্ত্রনে। যেখানে বারকী শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সুবাধে কালা মিয়ার সখ্যতা গড়ে উঠে ছিঁচকে চোরাকারবারিদের সাথে। এই সখ্যতাই জীবনে পাল্টে দেয় কালা মিয়ার। ঘুরতে থাকে ভাগ্যের চাকা। প্রথমে নিজে উপস্থিত থেকে চোরাচালানকৃত মালামাল চোরাকারবারিদের কথামতো অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতেন কালা। এখন শুধু কালা মিয়াই নয়। সহযোগী করেছেন নিজের স্ত্রীকে। নিজের স্ত্রীকে দিয়ে সিলেট জেলা ডিবি পুলিশের প্রাক্তন ওসি রেফায়াত হোসেন ও পরে দায়িত্ব প্রাপ্ত ওসি ইকবালকে ধর্মস্থ ভাই বানিয়ে গুছিয়ে নিয়েছেন নিজের আখের। তিনি ছিলেন জেলা ডিবি পুলিশের চোরাচালানের লাইনম্যান। এই পরিচয় পাওয়ার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। নিজেকে আড়ালে রেখে তার সহযোগী আলামিন, লনি মসাহিদকে দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তারা চোরাচালানের রাজত্ব।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, চোরাকারবারীদের মালামাল পরিবহনের পর কালা নিজেই ডিবি পুলিশের লাইনম্যান হয়ে গড়ে তোলে তার এক বিশাল চোরাকারবারী সিন্ডিকেট ও নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চোরাকারবারী শ্যাম কালা হাতিরপাড়া গ্রামের জুবেরের মাধ্যমে অবাধে চালিয়ে যায় চোরাচালান বাণিজ্য। রাতারাতি সে হয়ে ওঠে উপজেলা যুবলীগ নেতা। একটি পদ ভাগিয়ে নেয় টাকার বিনিমিয়ে। দলীয় সাইবোর্ড থাকায় ডিবির লাইনম্যান হিসাবে আরো সুবিধা জনক অবস্থানে পৌঁছায় শ্যামকালা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বার বার চেষ্টা করেও মোবাইল ফোনে যোগাযোগে থাকে পাওয়া যায়নি।
আগামীতে আসছে শ্যাম খালাকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন। চোখ রাখুন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ” সিলেট বুলেটিন” এ