সিলেট বুলেটিন ডেস্ক:
হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের কৃষক, বাবার ও মার কাছ থেকে কৃষি কাজে হাতে খড়ি। স্বামীর স্ত্রী মিলে মিশে বাড়িতে কৃষি কাজ করায় জানা পরিধি বৃদ্ধি পায়। স্বামী মৃত্যু তিন বছর ধরে কৃতিতে পরিবেশ সাথে চর্চা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে জীবন জীবিকায়নে সহায়ক হয়। দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, র্চ্চা, কৃষি ভিত্তিক অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে চাষাবাদে সফলতা পায়। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বাড়িতে গরু, ছাগল, হাঁস পালন করি ও জমিতে জৈব সার ব্যবহার করি। বর্ষা মোকাবেলায় উচু ভিটায় শাক সবজি চাষ ও নিচু জমিতে কচু চাষ করি। বৈচিত্র্যময় ফসল চাষ করায় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ও খাদ্য নিরাপত্তায় হয়। স্থানীয় জাতের বীজ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিনিময়ের মাধ্যমে সম্প্রসারণ হচ্ছে। আমি মাঠে ধান, শাক-সবজি, মসলা, ডাল, তৈল জাতীয় ফসল বৈচিত্র্য চাষ করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। কৃষি কাজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞাকে সহভাগিতা করার মাধ্যমে জৈব কৃষি ও এগ্রোইকোলজি চর্চা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের কৃষক মানিক বালা বিশ্বাস । গত তিন বছর আগে স্বামী সুশীল বিশ্বাস মারা যাওয়ার পর কৃষিকে অবলম্বন করে জীবন যাপন করি। সাথে কৃষিতে সময় দেন দুই ছেলে। মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য জৈব সার ও বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করি। বাড়ির পালানে টমেটু, লাশাক, শিম, ডাটা, মুলা, দেশী গোলআলু, পালংশাক, ফুলকপি, পাতাকপি, লাউ, বেগুন ধনিয়া, মরিচ, রসুন, পিয়াজ, চাষ করেছি। নিজের চাষকৃত শাক সবজি দিয়ে পরিবারের খাবার চলে। জমিতে শরিষা চাষ করি সারা বছর ব্যাপী তেল খাই। বাড়িতে পেঁপে, আম, কাঁঠাল, জামবুরা, কলা, পিচফল, তাল, পেয়ারা ফল আছে যার কারনে কিনতে হয়না। বর্ষার ৫ মাস চকে কই, শিং, পুটি, টেংরা, টাকি, শইল মাছ ধরে খাই। গরু ছাগল পালনস করায় জমিতে গোবর সার দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষাবাদের মাধ্যমে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। নিজে বীজ রাখি জমিতে চাষ করি। আমি প্রতিবছর কমপক্ষে ৫০ জনকে শাক সবজি ও মসলার বীজ ও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করি। বাড়িতে গরু, ছাগাল ও হাঁস পালন করে গোবর ও বিষ্ঠা দিয়ে জৈব সার তৈরি করি। ফলে আমার বাজার থেকে বীজ রাসায়নিক সার কিনতে হয় না। গরুর দুধ ও হাঁসের ডিম দিয়ে পরিবারে পুষ্টি চাহিদা পুরন হয়। নিজে কৃষি কাজ করায় নিরাপদ খাদ্য পাই ও ফলে ঔষধ কিনতে হয় না। আমি কৃষি কাজ শিখেছি বিধায় আমার জিবনযাপন প্রকৃতিক ও সহজ।
আমার চাষ নিজে খেয়ে অতিরিক্ত শাক সবজি বাজারে বিক্রয় করে থাকি। বাড়ি থেকে দুধ ডিম বিক্রয় করি। উপার্জনের টাকা আমার নিজের হাতে খরচ করি। বারসিক কৃষি কাজ আরো দৃশ্যমান করার জন্য তথ্য পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে। কৃষক পর্যায়ে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ,অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহনে সহায়তা করা হয়।
কৃষিতে আবাদ অভিজ্ঞতা ও অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখি। মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকায় নানাবিধ ফসল উৎপাদন ভালো হয়। আমার বাড়ির ও পাড়া প্রতিবেশী এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের কারণে আমাদের পরিবার ভালো আছে। বীজবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিনিময়ের মাধ্যমে এলাকার সবাই আমাকে মূল্যায়ন করেন। গোবর সার ব্যবহার করে চাষ করা ফলে আমার জমির মাটি ভালো। আমি জমিতে পরিশ্রম করি, য়ার কারণে মানুষসহ সকল প্রাণি নিরাপদ খাদ্য পায় ও ভালো থাকে। কৃষি শষ্য আবাদের মাধ্যমে বীজবৈচিত্র্য সজীব ও খাদ্য নিরাপত্তা হয়।